Header Ads

হার্ট অ্যাটাক কেন হয়, লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয় | ডা আবিদা সুলতানা | Why Heart Attacks Happen, Symptoms and Immediate Actions | Dr. Abida Sultana

হার্ট অ্যাটাক কেন হয়, লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয় | ডা আবিদা সুলতানা | Why Heart Attacks Happen, Symptoms and Immediate Actions | Dr. Abida Sultana

বিশ্বব্যাপী বাড়ছে হৃদরোগে আক্রান্তের সংখ্যা। প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ মানুষ মারা যাচ্ছেন হৃদরোগের বিভিন্ন সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে। বর্তমানে জীবনযাত্রায় অনিয়মের ফলে কমবয়সীদের মধ্যেও বেড়েছে হৃদরোগের ঝুঁকি। হৃদরোগের এমন কিছু লক্ষণ আছে যা হয়তো অনেকেরই জানা নেই। এই লক্ষণগুলোও অন্যান্য উপসর্গগুলোর মতই মারাত্মক। নানা কারণেই হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। এক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক এর চিকিৎসা করাতে না পারলে তৈরি হয় ঝুঁকি। ফলে এর জন্য সচেতন থাকা অত্যাবশ্যক। তাই সবার উচিত এ নিয়ে সতর্ক থাকা। বিশেষ করে হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলো জেনে রাখা সবারই উচিত।

হার্ট অ্যাটাক কী: হার্ট অ্যাটাক হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে হৃৎপিণ্ডে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। রক্তের ধমনীতে চর্বি ও কোলেস্টেরল জমার কারণে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। এমন পরিস্থিতিতে রক্তের ধমনীর ব্লক যদি সময় মতো অপসারণ না করা হয়, তাহলে অক্সিজেনের অভাবে হার্টের টিস্যু মরে যেতে শুরু করে।

কেন হয়: হৃদযন্ত্রের কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য হার্ট অক্সিজেনযুক্ত রক্ত নেয় করোনারি ধমনির মাধ্যমে। করোনারি আর্টারি তিনটি—লেফট করোনারি আর্টারি, রাইট করোনারি আর্টারি ও লেফট অ্যান্টেরিয়র ডিজেন্ডিং আর্টারি।

এই তিনটি আর্টারি বা ধমনির মধ্যে কোনো কারণে যদি কিছু অংশ বা পুরোপুরি ব্লক হয়, তাহলে হার্টের সমস্যা দেখা দেয়। পার্সিয়াল বা অংশত ব্লক হলে তাকে অ্যানজাইনা পেকটোরিস বলা হয়। আর সম্পূর্ণ ব্লক হলে তাকে বলা হয় হার্ট অ্যাটাক।

হার্ট অ্যাটাক কাদের হয়

১. বংশগত বা জেনেটিক কারণে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। কারো বাবা-মা কিংবা কাছের স্বজনদের হার্ট অ্যাটাক হয়ে থাকলে তাদের ঝুঁকি বেশি।

২. অতিরিক্ত অ্যালকোহল ও ধূমপান।

৩. অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস।

৪. অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ।

৫. অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা।

৬. শারীরিক ওজন কম, কিন্তু রক্তে কোলেস্টরেল বা অতিরিক্ত চর্বি বেড়ে গেলেও হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।

৭. কায়িক পরিশ্রম, ব্যায়াম ও হাঁটাহাঁটি না করা, শুয়ে-বসে থাকা।

৮. মানসিক চাপ, উদ্বেগ, বয়স, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণেও হতে পারে।

হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ

১. হার্ট অ্যাটাকের প্রধান লক্ষণ বুকে ব্যথা হওয়া। দুই বুকের মাঝখানে মুষ্টিবদ্ধ হাত রাখলে যেটুকু জায়গা এটাকে রেট্রোস্টার্নাল পেইন বলা হয়। ভেতর থেকে ব্যথা হবে আর এই জায়গার ব্যথাকেই হার্ট অ্যাটাকের ব্যথা বলে।

২. বুকের ব্যথা একসময় বাম হাত ও ঘাড়ের দিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে। চোয়াল, পেটেও ব্যথা হতে পারে।

৩. হার্ট অ্যাটাকের তীব্রতা বেশি হলে শ্বাসকষ্ট হতে পারে, কাশি হতে পারে।

৪. প্রেশার কমে গিয়ে অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে।

৫. বুকের ব্যথার তীব্রতা বেশি হলে অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে রোগী।

৬. অনেক সময় বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. বুক ধড়ফড় করা।

হার্ট অ্যাটাক হলে তাৎক্ষণিক করণীয়: চিকিৎসকরা বলেন, হার্ট অ্যাটাক এমন একটি সমস্যা যার কারণে তাৎক্ষণিকভাবে রোগী যেকোনো সময় মারা যেতে পারে। বুকে ব্যথা অনুভূত হলে, হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ মনে হলে যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। প্রয়োজনে জরুরি স্বাস্থ্য সেবায় (৯৯৯) ফোন করতে পারেন।

আক্রান্ত ব্যক্তি যেন বেশি নড়াচড়া না করেন, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শান্ত থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। রোগী যদি জ্ঞান হারায় বা শ্বাস নিচ্ছে না এমন হলে সঠিক নিয়মে কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন বা সিপিআর দিতে হবে। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে সিপিআর কীভাবে দিতে হয় সেটি জানেন এমন কোনো ব্যক্তি ছাড়া না জেনে যে কেউ সিপিআর দিতে পারবেন না।

আক্রান্ত ব্যক্তিকে অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধ অ্যান্টি প্লাটিলেট ড্রাগ দেওয়া যেতে পারে, যা রক্ত তরল করার জন্য ও ধমনিতে রক্ত প্রবাহে বাধা কমাতে সহায়ক।

কারো যদি আগে থেকে হার্টের সমস্যায় নাইট্রোগ্লিসারিন জাতীয় ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসক, তাদেরকে তাৎক্ষণিক অবস্থায় জিহ্বার নিচে ওই ওষুধ দেওয়া যেতে পারে। অন্যদের বেলায় দেওয়া যাবে না।

হার্ট অ্যাটাক হলে পালস রেট কমে যায়। এ সময় কাশি দিলে রিফ্লেক্স হয়, যার ফলে প্রেশার বাড়ে এবং হার্ট রেটও বেড়ে যায়। সেজন্য কাশি দিতে বলা যেতে পারে রোগীকে।

চিকিৎসা: চিকিৎসকরা বলেন, ইসিজি ও রক্ত পরীক্ষাসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষার মাধ্যমে হার্ট অ্যাটাক হয়েছে কি না, সেটি নিশ্চিত হবে। তাৎক্ষণিকভাবে রোগীর অবস্থা বিবেচনা করে রক্ত যাতে জমাট না বাঁধে, চর্বি না জমে সেজন্য রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করা ও রক্ত তরল করার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয় রোগীকে। প্রেশার, গ্যাস্ট্রিক, ডায়াবেটিস, কোলেস্টরেল থাকলে, ঘুম না হলে সেগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওষুধ খেতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শে। একই সঙ্গে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপনে পরিবর্তন আনতে হবে।

এ ছাড়া আধুনিক চিকিৎসা হিসেবে অ্যানজিওগ্রাম করা হয়। হার্ট অ্যাটাকের পর অ্যানজিওগ্রাম করা যেতে পারে, আবার পরেও করা যেতে পারে। অ্যানজিওগ্রামের মাধ্যমে দেখতে হবে হার্টের ব্লক আছে কি না। যদি বেশি ব্লক থাকে, তাহলে বাইপাস করতে হবে। আর যদি কম ব্লক অর্থাৎ এক বা দুইটা ব্লক থাকে তাহলে রিং পরানো যেতে পারে। হার্টের চিকিৎসায় রক্তনালীর ব্লক দূর করে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক বা পুনঃপ্রতিস্থাপন করাটাই গুরুত্বপূর্ণ।

ডা. আবিদা সুলতানার নতুন বই 'সফলতার সূত্র' রকমারি থেকে অর্ডার করতে ক্লিক করুন

প্রতিরোধ

১. জীবনযাপন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে হবে।

২. সকালে ও বিকেলে নিয়মিত ৩০-৪৫ মিনিট হাঁটা ও ব্যায়ামের অভ্যাস করতে হবে।

৩. অ্যালকোহল ও ধূমপান পরিহার করতে হবে।

৪. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, জাঙ্ক ফুড, অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিহার করতে হবে।

৫. ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, প্রেশার, কোলেস্টরেল থাকলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

৬. পরিবারে যদি হার্ট অ্যাটাকের ইতিহাস থাকে, তাদের ২০ বছর বয়সের পর থেকেই নিয়মিত চেক আপ করাতে হবে।

৭. উদ্বেগ, মানসিক চাপমুক্ত থাকতে হবে, ঝগড়া কিংবা জোরে কথা বলা থেকে বিরত থাকতে হবে।


হার্ট অ্যাটাক কেন হয়, লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয় | ডা আবিদা সুলতানা

Why Heart Attacks Happen, Symptoms and Immediate Actions | Dr. Abida Sultana


ডা আবিদা সুলতানা, Dr Abida Sultana, health, fitness, healthy life, সফলতার সূত্র, আসুন সুস্থ থাকি, মানসিক স্বাস্থ্য, asun sustho thaki, mental health

ডা. আবিদা সুলতানা, (এমবিবিএস)
জেনারেল প্রাকটিসার, সিটি হেলথ সার্ভিসেস লিঃ এন্ড সিটি হাসপাতাল লিঃ
মেডিসিন, চর্মরোগ, বাত-ব্যাথা, শিশু ও গাইনী রোগ বিশেষজ্ঞ।
লেকচারার, জেড এইচ সিকদার মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল, ঢাকা।


Follow Me -

Facebook : Dr. Abida Sultana 

Youtube : Dr. Abida Sultana 

X : Dr. Abida Sultana 

tiktik : Dr. Abida Sultana 

No comments

Powered by Blogger.