Header Ads

যে কারণে রক্তশূন্যতা হয়, প্রতিরোধে করণীয় | ডা আবিদা সুলতানা | Causes of anemia, what to do to prevent it | Dr. Abida Sultana

যে কারণে রক্তশূন্যতা হয়, প্রতিরোধে করণীয়, ডা আবিদা সুলতানা, Causes of anemia, what to do to prevent it, Dr. Abida Sultana

বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন সময় মানুষের শরীরে রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে। বয়স ও লিঙ্গভেদে হিমোগ্লোবিন যখন কাঙ্ক্ষিত মাত্রার নিচে অবস্থান করে, তখন আমরা একে অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা বলি। রক্তশূন্যতা আলাদা কোনো রোগ নয়। তবে রক্তশূন্যতার কারণে শরীরে বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি হতে পারে। মানবদেহে আয়রন, ভিটামিন বি১২ ও ফলিক এসিডের অভাব বা অতিরিক্ত রক্তপাত ও পাকস্থলীতে ইনফেকশনের কারণে রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে। তাই সব সময় রক্তশূন্যতা আছে কিনা সে বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।

রক্তশূন্যতা কি:

সাধারণত মেডিকেল টার্মে রক্তশূন্যতাকে অ্যানিমিয়া বলা হয়। রক্তে লোহিত রক্ত কণিকা (RBC) বা হিমোগ্লোবিন স্বাভাবিক সংখ্যার চেয়ে কমে গেলেই অ্যানিমিয়া দেখা দেয়। মানুষের রক্তে হিমোগ্লোবিন বারোর নিচে নেমে গেলে তাকে রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়া বলা হয়।

যদিও শিশুদের বেলায় রক্তশূন্যতা আছে কিনা তা বিভিন্ন বয়সে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণের উপর নির্ভর করে নির্ণয় করা হয়। যেমন নবজাতকের বেলায় যদি হিমোগ্লোবিন দশের কম হয় বা বারো হয়, তাহলে এটা রক্তশূন্যতা। কারণ, নবজাতকের রক্তের হিমোগ্লোবিন থাকতে হবে সতেরো বা আঠারো।

রক্তশূন্যতা কেন হয়:

অপুষ্টিজনিত কারণ, আয়রন, ফলিক এসিডের অভাবে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়।

থ্যালাসেমিয়ার মতো কিছু জন্মগত রোগের কারণেও রক্তশূন্যতা দেখা দেয়।

এ ছাড়াও শরীরের অভ্যন্তরীণ ক্ষতের কারণে রক্তক্ষরণের ফলেও শরীরে রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে।

এ ছাড়া অনেক সময় বংশানুক্রমে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়, অর্থাৎ পরিবারের কারও এই সমস্যা থাকলে পরবর্তী প্রজন্মেও রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে।

দীর্ঘদিন ধরে ব্যথার ওষুধ সেবন করলেও রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়।

রক্তশূন্যতার লক্ষণ:

১. রক্তের লোহিত রক্ত কণিকা বা হিমোগ্লোবিন অক্সিজেন পরিবহণ করে। তাই হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। এ ক্ষেত্রে রোগী সব কাজে হাঁপিয়ে বা ক্লান্ত হয়ে পড়েন। অনেক সময় শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়।

২. রক্তস্বল্পতার কারণে ত্বক ফ্যাকাশে হয়ে যেতে শুরু করে। এ ছাড়াও রক্তশূন্যতার কারণে চোখের ভেতরের মাংস পেশিগুলোও লাল রং হারিয়ে ফেলে।

৩. রক্তাল্পতায় আক্রান্তকে বিষণ্ণতায় ভুগতে দেখা যায়। সর্বক্ষণ দুর্বলতা আর মাথাব্যথা হওয়ার কারণে রোগীকে ক্রমশ বিষণ্ণতা গ্রাস করে। ক্ষুধামন্দাও দেখা দেয়।

৪. রক্তাল্পতার আর একটি উল্লেখযোগ্য লক্ষণ হল, হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া। রক্তশূন্যতার কারণে হৃৎপিণ্ড পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্ত শরীরে সঞ্চালনের জন্য পাম্প করতে পারে না। ফলে হৃৎস্পন্দন স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই বেড়ে যায়।

৫. শরীরের আয়রন কমে গেলেই দেখা দেয় রক্তশূন্যতা। আর আয়রন কমে গেলে চুলও পড়া বেড়ে যায়। তাই অতিরিক্ত চুল পড়ার সমস্যাও রক্তস্বল্পতার লক্ষণ হতে পারে।

৬. অনেক সময় হাত-পা ঠান্ডা হয়ে থাকাও কিন্তু রক্তশূন্যতার ইঙ্গিত দেয়। তাই এসব লক্ষণ দেখলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

৭. রক্ত স্বল্পতা বেশি হলে অনেক সময় ঠোঁটের কোণে ক্ষত হয়, জিহ্বায় ঘা হয়, চুলের ঝলমলে উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে যায়, চুল ও নখ ফেটে যায়।

৮. রক্তস্বল্পতায় ভোগা নারীদের মাসিক অনিয়মিত হয়ে পরে।


রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে আয়রনের ভূমিকা:

রক্তশূন্যতা এড়ানোর জন্য আয়রনসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। কচু, কচু শাক ও কচুজাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে। এছাড়াও পালংশাক, শিম ও শিমের বিচি, কাঁচাকলা, ফুলকপি, কলিজা, সামুদ্রিক মাছ, দুধ, ডিম, খেজুর, মুরগির কলিজা, গরু-খাসির মাংসও আয়রনসমৃদ্ধ খাবার। আয়রন, ক্যালসিয়াম, কার্বোহাইড্রেইড ও ফাইবার সমৃদ্ধ বেদানা হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি পূরণে সাহায্য করে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার আয়রন শোষণে সাহায্য করে। অন্যদিকে, খাবারে আয়রনের অভাব থাকলে কিংবা বেশি চা-কফি পান করলে আয়রন শোষণ বাধাগ্রস্ত হয়।

রক্তশূন্যতার চিকিৎসা:

এনিমিয়া বা রক্তশূন্যতা আসলে কোনো রোগ নয়, রোগের উপসর্গ। সুতরাং যে কারণে এনিমিয়া হয়েছে, তা সনাক্ত করে সে অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়াটাই হলো এনিমিয়ার মূল চিকিৎসা। কখনো কখনো পরিস্থিতি অনুযায়ী চিকিৎসকের পরামর্শে আয়রন ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল খাওয়া যেতে পারে। পরিস্থিতি বুঝে অনেক সময় শিরাপথে আয়রন ইনজেকশনও দিয়ে থাকেন চিকিৎসক।

রক্তশূন্যতায় আক্রান্ত হলে প্রথমে এটির তীব্রতা জানতে হবে। এর পেছনের কারণ খুঁজে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম। আপনি যদি অল্পতেই ক্লান্ত হন এবং শ্বাসকষ্টে ভোগেন। এ ছাড়া কখনও রক্ত ​​দান করার সময় যদি আপনাকে বলা হয় যে, আপনি কম হিমোগ্লোবিনের কারণে রক্ত দান করতে পারবেন না, তাহলে চিকিৎসকের স্বরণাপন্ন হন।


যে কারণে রক্তশূন্যতা হয়, প্রতিরোধে করণীয় | ডা আবিদা সুলতানা
Causes of anemia, what to do to prevent it | Dr. Abida Sultana


ডা আবিদা সুলতানার স্বাস্থ্য পরামর্শ বিষয়ক বই আসুন সুস্থ থাকি  ও মানসিক স্বাস্থ্য

ডা আবিদা সুলতানা, Dr Abida Sultana, health, fitness, healthy life, সফলতার সূত্র, আসুন সুস্থ থাকি, মানসিক স্বাস্থ্য, asun sustho thaki, mental health

ডা. আবিদা সুলতানা, (এমবিবিএস)
জেনারেল প্রাকটিসার, সিটি হেলথ সার্ভিসেস লিঃ এন্ড সিটি হাসপাতাল লিঃ
মেডিসিন, চর্মরোগ, বাত-ব্যাথা, শিশু ও গাইনী রোগ বিশেষজ্ঞ।
লেকচারার, জেড এইচ সিকদার মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল, ঢাকা।


Follow Me -

Facebook : Dr. Abida Sultana 

Youtube : Dr. Abida Sultana 

X : Dr. Abida Sultana 

tiktik : Dr. Abida Sultana 

No comments

Powered by Blogger.