শিশুরও হতে পারে ডায়াবেটিস, যেভাবে বুঝবেন | ডা আবিদা সুলতানা | Children can also have diabetes, how to understand | Dr. Abida Sultana
ডায়াবেটিস শুধুই বড়দের রোগই নয়, শিশুরাও আক্রান্ত হতে পারে। কোন কোন লক্ষণ দেখে বুঝবেন বাচ্চার ডায়াবেটিস হয়েছে এবং সেটি আদৌ পরিত্রাণ যোগ্য কি না, তা নিয়েই আজকের প্রতিবেদন। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।
ডায়াবেটিসের ধরন
ডায়াবেটিস মূলত দুই ধরনের।
টাইপ ১ ও টাইপ ২। বাচ্চাদের সাধারণত টাইপ ১ ডায়াবেটিস হয়। বড়দের দেখা যায় টাইপ ২ ডায়াবেটিস। তবে কিছু ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রে বাচ্চাদেরও টাইপ ২ ডায়াবেটিস হতে পারে।
সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, বয়ঃসন্ধিকালে টাইপ ২ ডায়াবিটিসের প্রকোপ বাড়ছে।
গত দুই শতকে আস্তে আস্তে বাড়ছে টাইপ ২ ডায়াবেটিস। শিশুদের মধ্যেও আগের তুলনায় বেড়েছে ডায়াবেটিসের প্রকোপ। এও দেখা গেছে যে, কোভিড পরবর্তী সময়ে টাইপ ১ ডায়াবেটিসের প্রকোপ বাড়ছে।
যে সব শিশু আক্রান্ত হয়েছে, তাদের প্রত্যেকরই কোভিড অ্যান্টিবডি পজিটিভ ছিল। কোভিড সংক্রমণে হয়ত অগ্ন্যাশয়ে বিটা সেল ধ্বংস হয়ে গেছে। ফলে টাইপ ১ ডায়াবেটিস হচ্ছে। তবে বিষয়টি গবেষণাধীন।
দুটির মধ্যে পার্থক্য
টাইপ ১ ডায়াবেটিসে শরীরের মধ্যে ইনসুলিন কম তৈরি হয়।
শরীরে অগ্ন্যাশয়ের মধ্যে থাকে বিটা সেল, যা ইনসুলিন তৈরি করে। কোনো কারণে যদি কোষ নষ্ট হয়ে যায় তাহলে শরীরে ইনসুলিন হয় তৈরি হয় না বা হলেও খুব কম হয়। তখন শরীরে ইনসুলিনের ঘাটতি হয় এবং টাইপ ১ ডায়াবেটিস দেখা যায়। টাইপ ২ ডায়াবেটিসে শরীরে ইনসুলিন ঠিকই তৈরি হয়, কিন্তু তা শরীরের যে অংশে থেকে কাজ করে, সেখানে ‘রেজিস্ট্যান্স’ তৈরি হয়।
এমনও হতে পারে, কোনো শিশু জন্ম থেকেই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। একে নিও-নেটাল ডায়াবেটিস বলা হয়। যা একটি জিনগত ব্যাধি। এতে বাচ্চারা খুবই অসুস্থ হয়। রক্তে শর্করার মাত্রা অত্যধিক থাকে। জীবন সংকটপূর্ণও হতে পারে।
বিভিন্ন রোগের আঁতুড়ঘর ডায়াবেটিস
ডায়াবেটিস থেকে একাধিক শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। তালিকায় সবচেয়ে ভয়ংকর ডায়াবেটিস কিটোঅ্যাসিডোসিস। প্রায় ৬০ শতাংশ বাচ্চাদের টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস প্রথম যখন ধরা পড়ে, সঙ্গে ডায়াবেটিস কিটোঅ্যাসিডোসিস-ও দেখা দেয়। এই রোগটি প্রাণঘাতী।
ডায়াবেটিসের সঠিক চিকিৎসা না হলে তার থেকে দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পায়, যাকে বলে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি। এছাড়া কিডনির জটিলতাও হতে পারে। যার পোশাকি নাম ডায়াবেটিক নেফ্রোপ্যাথি। এর দ্বারা হার্টের সমস্যাও হয়।
শিশুর অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করুন
যদি দেখেন, শিশু হঠাৎই প্রচুর পানি খাচ্ছে, প্রচুর প্রস্রাব করছে, তার খিদেও হঠাৎই খুব বেড়ে গেছে, কিন্তু খেলেও ওজন বাড়ছে না। বরং দ্রুত গতিতে ওজন কমছে, তাহলে সতর্ক হোন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাচ্চারা বেশি পানি খেলে বাবা-মায়েরা ভাবেন, এ তো ভালো কথা। কিন্তু সেটা যে আদতে অস্বাভাবিকতা, তা বাকি লক্ষণগুলো দেখলেই ধরা সম্ভব। সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু না করলে আক্রান্ত শিশুর অন্য সমস্যা, যেমন শ্বাসকষ্ট, জ্ঞান হারিয়ে ফেলা প্রভৃতি সমস্যা হতে পারে।
প্রতিরোধ করা কি সম্ভব ?
টাইপ ১ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। টাইপ ২ ডায়াবেটিস ‘প্রিভেনটেবল’। ডায়াবেটিসের জন্য জীবনযাত্রা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দায়ী। তাই সঠিক জীবনযাপনের ধরনে পরিবর্তন আনা দরকার।
শিশুর জন্মের পর প্রথম ছয় মাস শুধু মায়ের বুকের দুধ খাবে। কৌটোর দুধ দেবেন না। ফাস্ট-ফুড খাওয়াবেন না। বড় হওয়ার সময়ে নিয়মিত ব্যায়াম করান। স্থূলতা যেন বাসা না বাঁধে। শিশুকে হাই ফাইবার ডায়েট দিন। আপাতত টাইপ ১ ডায়াবেটিসের চিকিৎসা একটাই। ইনসুলিন ইঞ্জেকশন। সারা জীবন নিয়ে যেতে হবে। সঙ্গে দরকার উপযুক্ত ডায়েট ও কায়িক পরিশ্রম। এখনো পর্যন্ত এই ব্যাধি ‘কিউরেবল’ নয়, তবে ‘ট্রিটেবল’।
শিশুরও হতে পারে ডায়াবেটিস, যেভাবে বুঝবেন | ডা আবিদা সুলতানা
Children can also have diabetes, how to understand | Dr. Abida Sultana
ডা আবিদা সুলতানার স্বাস্থ্য পরামর্শ বিষয়ক বই আসুন সুস্থ থাকি ও মানসিক স্বাস্থ্য
ডা আবিদা সুলতানা, Dr Abida Sultana, health, fitness, healthy life, সফলতার সূত্র, আসুন সুস্থ থাকি, মানসিক স্বাস্থ্য, asun sustho thaki, mental health
- ডা. আবিদা সুলতানা, (এমবিবিএস)
জেনারেল প্রাকটিসার, সিটি হেলথ সার্ভিসেস লিঃ এন্ড সিটি হাসপাতাল লিঃ
মেডিসিন, চর্মরোগ, বাত-ব্যাথা, শিশু ও গাইনী রোগ বিশেষজ্ঞ।
লেকচারার, জেড এইচ সিকদার মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল, ঢাকা।
Follow Me -
Facebook : Dr. Abida Sultana
Youtube : Dr. Abida Sultana
tiktik : Dr. Abida Sultana
No comments