অন্তঃসত্ত্বা নারী কোন অবস্থায় রোজা রাখবেন, কোন অবস্থায় পারবেন না || ডা. আবিদা সুলতানা || A pregnant woman can fast in any condition, and in no condition can she fast || Dr Abida Sultana
একটি শিশুর স্বাস্থ্য, তার ওজন, শারীরিক ও মানসিক বিকাশ অধিকাংশই বেড়ে ওঠে শিশুটি যখন মাতৃগর্ভে থাকে। অন্তঃসত্ত্বা নারী যদি খাবার না খায় তা হলে গর্ভের শিশুটি পুষ্টি ঠিকভাবে পায় না, তখন সেই শিশুটির বিভিন্ন ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে। গর্ভের সময় একজন নারীর দ্বিগুণ পরিমাণে খাবার ও ক্যালরি দরকার পড়ে। কারণ গর্ভের শিশুটি মায়ের থেকেই পুষ্টি পেয়ে থাকে এবং তার বেড়ে ওঠা নির্ভর করে মায়ের ভালো থাকার ওপর।
ইসলামী বিধানে অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের রোজা রাখার ব্যাপারে শিথিলতা রয়েছে। কারণ গর্ভবতী অবস্থায় একজন মা যদি রোজা রাখেন, তা হলে দীর্ঘক্ষণ তাকে না খেয়ে থাকতে হয়, তখন তার প্রভাব শিশুটির ওপর পড়তে পারে। তবুও মায়ের শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে তিনি রোজা রাখতে পারবেন কী পারবেন না। যদি অন্তঃসত্ত্বা নারী ও গর্ভস্থ শিশু স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে, তাহলে মা রোজা রাখতে পারবেন প্রথম তিন মাস। তবে অনেকের বিভিন্ন ধরনের জটিলতা দেখা যায়। যেমন বেশি বমি হয়। এ সময় রোজা না রাখাই ভালো। যদি রোজা রাখেন অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মতো রাখতে হবে।
ডা. আবিদা সুলতানার স্বাস্থ্যপরামর্শ বিষয়ক বই আসুন সুস্থ থাকি, মানসিক স্বাস্থ্য
অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় শেষ তিন মাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেমনভাবে প্রথম তিন মাস গুরুত্বপূর্ণ। তাই এ সময় অবশ্যই স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে হবে এবং যত্ন নিতে হবে। শিশু যেন গর্ভে ঠিকভাবে বেড়ে ওঠে সে ব্যাপারে পরিবারের সবাইকে সহায়তা করতে হবে। যদি অন্তঃসত্ত্বা নারী রোজা রাখতেই চান, তা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রোজা রাখবেন। গর্ভকালীন সময়ে দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে হবে, বিশ্রাম নিতে হবে বেশি করে এবং অতিরিক্ত পরিশ্রম করা যাবে না। ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত সময়টুকুতে পানি খেতে হবে, সঙ্গে স্বাস্থ্যসম্মত পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। ভাজাপোড়া খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
রোজা রাখার সময় বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন- তলপেট ব্যথা করে অথবা গর্ভের শিশুটি কম নাড়াচাড়া করে। মাথাব্যথা অথবা মাথা ঝিমঝিম করা এসব সমস্যা হলে দ্রুত চিকিৎসক এর পরামর্শ নিতে হবে। একজন অন্তঃসত্ত্বা তার নিজের শরীরে অন্য একটি জীবনকে ধারণ করছেন। তাই সেই জীবনের দায়িত্ব মায়ের ওপর চলে আসে এবং সে জন্য মাকে সহায়তা করতে হবে পরিবারের সবাইকে সামাজিকভাবে মানসিকভাবে সবাইকে সহায়তা করতে হবে। উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কিডনি জটিলতা, হৃদযন্ত্রের সমস্যার মতো স্বাস্থ্য জটিলতা থাকলে এ সময় গর্ভবতী নারীদের রোজা না রাখাই ভালো।
পরিশেষে বলতে চাই একটি শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাই সেই শিশুর সঠিকভাবে বেড়ে ওঠার দায়িত্ব অবশ্যই সমাজের এবং পরিবারের দায়বদ্ধতা আছে সবার,তাই গর্ভকালীন মা ও শিশুর যত্ন নেওয়া সবারই প্রয়োজন।
No comments