Header Ads

মৃগী রোগ || ডা. আবিদা সুলতানা || Epilepsy || Dr. Abida Sultana

মৃগী রোগ, ডা আবিদা সুলতানা, Epilepsy, Dr Abida Sultana, health, fitness, healthylifestyle, আসুন সুস্থ থাকি, মানসিক স্বাস্থ্য, asun sustho thaki, menta


মৃগী রোগ কি ?

মস্তিষ্কের স্নায়ু কোষ থেকে হঠাৎ অতিরিক্ত বা বার বার বিদ্যুৎ প্রবাহের ফলে মস্তিষ্কের ক্ষণিক গোলযোগ, অর্থাৎ চেতনার বিঘ্ন সৃষ্টির সমষ্টিকে মৃগী রোগ বলে। মৃগী রোগে সাধারণত খিঁচুনি থাকে। তবে খিচুনি ছাড়াও মৃগী রোগ হতে পারে।
রোগের আক্রমণের স্থায়ীকাল : মৃগী রোগের স্থায়ীকাল কয়েক সেকেন্ড থেকে কয়েক মিনিট হয়। তবে সাধারণত ২ মিনিটের বেশি হয় না। কিন্তু যার মধ্যে কোন খিঁচুনি নেই, শুধু আচরণগত সমস্যা আছে, তার মধ্যে এই রোগের স্থায়ীকাল তুলনামূলক বেশি। সেটা কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘন্টা পর্যন্ত হতে পারে।
কাদের এই রোগ হয়?
শতকরা এক থেকে দুইজনের এই রোগ হতে পারে। শিশু থেকে বৃদ্ধ সব ধরনের মানুষের মধ্যে এই রোগ হতে পারে। পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে সমানভাবেই দেখা যায়। সব পেশার এবং গ্রামের শহরের যে কারোরই এর রোগ হতে পারে।
কারণ : বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোন কারণ জানা যায়নি। তবে সাধারণত যে কারণগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে সেগুলো হল - প্রসবকালীন নবজাতক শিশুর অসুবিধা বা জটিলতা, মস্তিষ্কে আঘাত, মস্তিষ্কে জন্মগত সমস্যা, মারাত্মক জ্বর বা ইনফেকশন, ম্যাগনেসিয়াম এর অভাব, মাদকদ্রব্য প্রত্যাহারজনিত কারণ, মস্তিষ্কের টিউমার, কিডনি রোগ, ইউরেনিয়া, হার্ট ব্লক, মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে গোলযোগ জনিত রোগ অন্যতম।

মৃগী রোগের লক্ষণ : মৃগী রোগের লক্ষণগুলোকে সাধারণত চার ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। যেমন-
১. ফিটপূর্ব লক্ষণ।
২. ফিট চলাকালীন লক্ষণ
৩. ফিট উত্তর লক্ষণ
৪. দুই ফিটের মাঝের লক্ষণ
১. ফিটপূর্ব লক্ষণসমূহ : ফিট শুরু হবার কয়েক ঘন্টা এমনকি কয়েক দিন আগে থেকে রোগীর মধ্যে অস্থিরতা, চঞ্চলতা খিটখিটে মেজাজ, আবেগের অস্বাভাবিকতা, নিদ্রাহীনতা, বিষাদভাব প্রভৃতি লক্ষণ প্রকাশ পেতে থাকে। কোনো কোনো রোগী এই উপসর্গকে ফিটের পূর্বাভাস বলে মনে করে।
২. ফিট চলাকালীন লক্ষণসমূহ : আচ্ছন্ন ভাবে তাকিয়ে থাকা, কোনো কিছু চিবানোর মত করে মুখ নাড়ানো, গলায় শব্দ করা, পুণঃ পুণঃ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নাড়ানো।
৩. ফিট উত্তর লক্ষণসমূহ : আক্রমণাত্মক আচরণ, অস্বাভাবিক আচরণ, অশ্লীল আচরণ ইত্যাদি।
৪. দুই ফিটের মধ্যবর্তীকালীন লক্ষণসমূহ : আকস্মিক ক্রোধ, মন্থর চিন্তাধারা, আত্মকেন্দ্রিক, ঝগড়াটে, পরনির্ভরশীলতা, সূচিবাই স্বভাব, খিটখিটে মেজাজ, অস্বাভাবিক ধর্মপ্রবণতা, সিজোফ্রেনিয়া, আত্মহত্যার প্রবণতা।


ডা. আবিদা সুলতানার স্বাস্থ্যপরামর্শ বিষয়ক বই  আসুন সুস্থ থাকি, মানসিক স্বাস্থ্য    বই সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন

চিকিৎসা : যেহেতু সকলেই এই রোগ সম্পর্কে একটা ভুল ধারণা পোষণ করে এবং একে সামাজিক কলঙ্ক হিসেবে দেখে, সুতরাং এর চিকিৎসায় ওষুধের সাথে রোগীকে মানসিক চিকিৎসা ও সামাজিক সমর্থন জরুরী। সামাজিক প্রত্যাখানের ফলে রোগী সামাজিক প্রতিবন্ধি হয়ে পড়ে। তাই এই রোগ ও এর খিঁচুনী সম্পর্কে সামাজিক প্রত্যাখান বন্ধ হতে পারে। রোগীকে অন্যদের মত সাধারণ স্কুলে লেখাপড়ার সুযোগ করে দিতে হবে।
আমাদের দেশে খিঁচুনির সময় রোগীর নাকে জুতা শুকানো হয় এবং হাতে লোহার দণ্ড রাখা হয়। এর কারণ কি?
এটি একটি ভ্রান্ত সামাজিক বিশ্বাস। ধারণা করা হয় যে এতে রোগী আরোগ্য লাভ করবে। আসল ব্যাপারটি হচ্ছে যেহেতু এই রোগের স্থায়ীকাল সংক্ষিপ্ত, সুতরাং নিঃসন্দেহে এরকম কার্যকলাপ অমানবিক ও কুসংস্কার কাজ। এবং এর থেকে বিরত থাকতে হবে।
মৃগী রোগীকে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া কি ঠিক হবে?
আমাদের দেশে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে মৃগী রোগ আছে কি না তা পরীক্ষা করার ব্যবস্থা নেই। এটা থাকা খুব জরুরী। কারণ গাড়ি চালানো অবস্থায় যদি রোগটি দেখা দেয়, হোক না সেটা খিঁচুনিবিহীন মৃগী রোগী, তাহলে সড়ক দুর্ঘটনা অবশ্যই হবে। আমাদের দেশে সড়ক দুর্ঘটনা বেশি হবার পেছনে ড্রাইভারের মাদকাসক্তি যতটুকু দায়ী, ততটুকুই মৃগী রোগজনিত কারণও দায়ী।


মৃগী রোগ || ডা. আবিদা সুলতানা || Epilepsy || Dr. Abida Sultana

No comments

Powered by Blogger.