হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোক এর মধ্যে পার্থক্য কি || What is the difference between heart attack and stroke || Dr. Abida Sultana
হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক এই দুটি শব্দই জনমনে আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য যথেষ্ট। অনেক সময়ই হার্ট অ্যাটাক, অথবা স্ট্রোকে নানা বয়সী মানুষের হঠাৎ মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। ফলে এ নিয়ে শঙ্কা থাকাটা খুবই স্বাভাবিক। যদিও শঙ্কার চেয়ে সাবধানতাটাই বেশি জরুরি। আর এ জন্য জানা প্রয়োজন হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক আসলে কী, কেন হয়, লক্ষণ বা চিকিৎসায় এ দুইয়ের পার্থক্যই–বা কোথায়?
হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক মানুষের জীবনের দুটি জটিল রোগ; যা হঠাৎ শয্যাশায়ী করে, জীবনকে ছন্দহীন করে তোলে। এমনকি এতে জীবননাশের আশঙ্কা দেখা দেয়। হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক সাধারণত ভুলভাবে উচ্চারিত হয়। কেউ কেউ স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাককে গুলিয়ে ফেলেন। যেহেতু দ্রুততম সময়ে চিকিৎসা নিলে ক্ষতি অনেকটাই কমানো যায়, সেহেতু সাধারণ মানুষের এ দুটি রোগ সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা রাখা জরুরি।
হার্ট অ্যাটাক
মূলত হার্ট বা হৃদ্যন্ত্রে রক্ত সরবরাহ বাধাগ্রস্ত বা বন্ধ হয়ে গেলে হৃদযন্ত্রের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা এর টিস্যুগুলো মারা যায়। এটিকেই হার্ট অ্যাটাক বলে। এক কথায়—হৃৎপিণ্ডের কোষ রক্ত সরবরাহ না পেয়ে ধ্বংস হয়ে যাওয়াকেই হার্ট অ্যাটাক বলা যায়।
সারা শরীরে রক্ত সরবরাহের কাজটি হার্ট করে। এই হার্টের মধ্যেও নানা ধরনের টিস্যু রয়েছে, যার বেঁচে থাকার জন্য নিয়মিত অক্সিজেন সরবরাহ প্রয়োজন। এই অক্সিজেন সরবরাহে বাধা এলেই শুরু হয় যত বিপত্তি। কলাম্বিয়া রিজিওনাল হেলথের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে হার্ট অ্যাটাকের কারণ সম্পর্কে বলা হয়—হার্ট বা হৃদ্যন্ত্রের মধ্যে থাকা রক্তনালীর রোগের (করোনারি আর্টারি ডিজিজ বা ক্যাড) চূড়ান্ত ফল হচ্ছে হার্ট অ্যাটাক। এই রক্তনালীগুলোর মধ্যে যদি ফ্যাট বা চর্বি জমে, তবে তা রক্ত সংবহনে বাধা সৃষ্টি করে। একপর্যায়ে হার্টের টিস্যুগুলো প্রয়োজনীয় অক্সিজেন থেকে বঞ্চিত হয়, যা টিস্যুগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এর ফল হয় হার্টের ওই অংশ অকার্যকর হয়ে পড়ে। এটিই হার্ট অ্যাটাক।
হার্ট অ্যাটাক কী, কেন হয়, আর প্রতিকারের উপায় কী?হার্ট অ্যাটাক কী, কেন হয়, আর প্রতিকারের উপায় কী?
স্ট্রোক কী
মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ বাধাগ্রস্ত বা বন্ধ হয়ে গেলে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তা–ই স্ট্রোক। বিষয়টি বোঝার জন্য চিকিৎসকেরা স্ট্রোককে ‘ব্রেইন অ্যাটাক’ হিসেবে চিহ্নিত করেন। হার্ট অ্যাটাকের সাথে এর মিল শুধু এখানেই যে, স্ট্রোকের ক্ষেত্রেও রক্ত সরবরাহজনিত সংকটই মূল। আর পার্থক্য হলো—হার্ট অ্যাটাক হয় হার্টে, আর স্ট্রোক বা ব্রেইন অ্যাটাক হয় মস্তিষ্কে।
স্ট্রোকের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহের সাথে যুক্ত রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত বা রক্তনালীর ভেতর রক্ত জমাট বাঁধলে বা রক্তনালী ছিঁড়ে যাওয়াই বিপত্তির মূল কারণ। যখন মস্তিষ্কে সরবরাহ করা রক্ত কোথাও বাধাগ্রস্ত হয়, তখন একে ইসকেমিক স্ট্রোক বলে। তবে কখনো কখনো সাময়িকভাবে মস্তিষ্কের রক্তনালীতে ক্লট তৈরি হয়। তখন রক্ত সংবহনে সাময়িক বাধার সৃষ্টি হয়। এই ঘটনাকে ট্রান্সিয়েন্ট ইসকেমিক স্ট্রোক বা সাধারণভাবে মিনি স্ট্র্রোক বলে।
তবে সবচেয়ে বাজে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, যখন মস্তিষ্কের কোনো রক্তনালী ছিঁড়ে যায় বা তাতে ফাটল সৃষ্টি হয়, তখন। তখন মস্তিষ্কের কোষগুলো প্রয়োজনীয় রক্ত সরবরাহ পায় না। ফলে অক্সিজেন ঘাটতিতে ভুগতে থাকে। একে বলে হেমোরেজিক স্ট্রোক। এতে মস্তিষ্কের সংশ্লিষ্ট কোষগুলো মরতে শুরু করে। ফলে সেসব কোষের সাথে যুক্ত শরীরের বিভিন্ন অঞ্চল অকার্যকর হতে শুরু করে।
মূল পার্থক্য
হার্ট অ্যাটাক : হৃদ্যন্ত্রে রক্ত সরবরাহ করে যে করোনারি আর্টারি বা রক্তনালি, সেটির ৭০ ভাগ বা বেশি বন্ধ বা ব্লক হলে এমন হয়। হৃদ্যন্ত্রেও নির্দিষ্ট কোনো অংশ পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহ না পাওয়ার কারণে নষ্ট হয়ে যায়। তবে এতে শরীরে কোনো অংশ সাধারণত অবশ হয় না; তবে উপসর্গ হিসেবে বুকে তীব্র ব্যথা হয়। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে ইসিজি, কার্ডিয়াক এনজাইম, ইকোসহ প্রাথমিক পরীক্ষাগুলো করে রোগ নির্ণয় এবং করোনারি কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসা নিলে রোগীকে বাঁচানো সম্ভব। হৃদ্যন্ত্রের ক্ষতিও এড়ানো সম্ভব।
স্ট্রোক : স্ট্রোক আসলে হৃৎপিণ্ডের নয় বরং মস্তিষ্কের রোগ। মস্তিষ্কে রক্তসরবরাহকারী রক্তনালি বন্ধ হলে বা ছিঁড়ে গেলে এ সমস্যা হয়। এর ফলে শরীরের এক পাশ অবশ হতে পারে। মুখ বেঁকে যাওয়া, খিঁচুনি, কথা আটকে যাওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে। সিটি স্ক্যান প্রাথমিক পরীক্ষা। দ্রুত রোগ নির্ণয়ের পর নিউরো কেয়ার ইউনিটে নিয়ে গেলে সবচেয়ে ভালো।
কীভাবে বুঝবেন হার্ট অ্যাটাক নাকি স্ট্রোককীভাবে বুঝবেন হার্ট অ্যাটাক নাকি স্ট্রোক
হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক, কার কী লক্ষণ
রোগ যেমন আলাদা, তেমনি হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের লক্ষণেও রয়েছে বিশেষ পার্থক্য। সবচেয়ে বড় পার্থক্য হলো—ব্যথার স্থানে। স্ট্রোকের ক্ষেত্রে সাধারণত তীব্র মাথাব্যথা একটি লক্ষণ। বিপরীতে হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে এই ব্যথা হয় বুকে। স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনমতে, এ দুই রোগেরই লক্ষণ রোগীভেদে আলাদা হতে পারে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বয়স, লৈঙ্গিক পরিচয়, শরীরের অন্য বিষয়গুলোর অবস্থা, জীবনযাপন প্রণালি ইত্যাদি ভেদে এ দুই রোগের লক্ষণ আলাদা হতে পারে। তারপরও কিছু সাধারণ লক্ষণ মোটাদাগে সব রোগীর মধ্যেই দেখা যায়—
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে—
১। শ্বাস-প্রশ্বাসে যদি কষ্ট হয় তাহলে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা থাকে। শ্বাস নিতে কষ্ট হলে, দম আটকে এলে অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। হৃদযন্ত্রের কোনো রকম সমস্যা হলে ফুসফুসও অক্সিজেন কম পায়। তাই এই লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
২। কোনো কারণ ছাড়াই ঘাম হলে বা একটুতেই হাঁপিয়ে উঠলেও দুশ্চিন্তার কারণ রয়েছে। শরীরে ঠিকভাবে রক্ত চলাচল না হলে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ঠিকভাবে অক্সিজেন পায় না। তাই হাঁপ ধরতে পারে।
৩। মাঝরাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে দরদর করে ঘামতে থাকলে তা উপেক্ষা করা যাবে না।
৪। সাধারণত বুকে ব্যথা হওয়াটা সবচেয়ে প্রচলিত লক্ষণ। হঠাৎ করে বুকটা ভীষণ চেপে ধরে। মনে হয় বুকটি ভেঙ্গে পড়ল। অনেক ওজন চেপে গেছে। এটা হয় শুরুতে এবং এর সাথে সাথে অনেকের শরীরে ঘাম হতে থাকে। তাই বুকে ব্যথা বা চাপ লাগার মতো অনুভূতি হলে অবশ্যই চিকিৎসককে জানাতে হবে।
৫। শ্বাসকষ্ট এবং হঠাৎ মাথা ফাঁকা লাগতে পারে।
৬। মেয়েদের ক্ষেত্রে কিছু লক্ষণ আলাদা। বুকে ব্যথা, ঘাম হওয়া বা হাঁপ ধরা ছাড়াও পেটে অস্বস্তি, পিঠে ব্যথার মতো কিছু অন্যান্য লক্ষণও দেখা দিতে পারে।
৭। উচ্চ রক্তচাপ থাকলে নিয়মিত চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা জরুরি।
৮। অনেকের ক্ষেত্রে হঠাৎ করে ভীষণ উদ্বেগ কাজ করে, যাকে অনেকে প্যানিক অ্যাটাকের সাথে গুলিয়ে ফেলে। তবে এ লক্ষণ সবার ক্ষেত্রে দেখা যায় না।
৯। কিছুটা অপ্রচলিত হলেও অনেকের ক্ষেত্রে ভীষণ কফসহ কাশি হয়।
আরো পড়ুন চুল পড়া কমাতে যেসব অভ্যাস পরিবর্তন জরুরি
স্ট্রোকের লক্ষণ
স্ট্রোকের লক্ষণগুলোর মধ্যে যেগুলোর বিষয়ে সতর্কতা ভিষণভাবে জরুরি—
১. মুখের অর্ধেক অসাড় হয়ে পড়া স্ট্রোকের প্রাথমিক লক্ষণগুলোর একটি। হাসার সময় মুখের অর্ধেক নাড়াতে না পারলে বা মুখের অর্ধেক পুরোপুরি অসাড় হয়ে পড়লে তা স্ট্রোকের স্পষ্ট একটি লক্ষণ।
২. স্ট্রোকের আরেকটি স্পষ্ট লক্ষণ হলো কোনো একটি বাহুতে এমন দুর্বলতা বা অসাড়তা যে, তা মাথার ওপর টেনে তোলা যায় না।
৩. হঠাৎ করেই কথা বলার সময় অস্পষ্ট আওয়াজ করতে থাকলে তা স্ট্রোকের লক্ষণ। এমন ঘটলে সঙ্গে সঙ্গেই হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
৪. দেহের কিছু অংশ বা অর্ধেকটাজুড়ে দুর্বলতা বা প্যারালাইসিস এর মধ্য দিয়েও স্ট্রোকের লক্ষণ ফুটে ওঠে। এমন লক্ষণ দেখা দেওয়ার সাথে সাথেই হাসাতাল ও চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
৫. স্ট্রোকের আরেকটি লক্ষণ হলো—কোনো একটি চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসা।
৬. হঠাৎ ঝিমুনিও স্ট্রোকের একটি লক্ষণ। মস্তিষ্কের একটি অংশে রক্তসরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে এটা ঘটে।
৭. হঠাৎ করেই হাঁটা-চলায় অক্ষম মনে হলে বুঝতে হবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন।
৮. অনেক বেশি তীব্র মাথা ব্যথায় আক্রান্ত হলে বুঝতে হবে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন।
৯. স্মৃতি হারানোকেও গুরুত্ব দিন। এর মানে হচ্ছে মস্তিষ্কের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য নির্দিষ্ট কোষগুলো যথাযথভাবে কাজ করছে না।
১০. মস্তিষ্কই যেহেতু আমাদের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে সেহেতু স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে লোকের অস্বাভাবিক রাগ, উদ্বেগ এবং ভ্যাবাচেকা খাওযার মতো সমস্যা দেখা দেয়।
১১. লালা গেলায় সমস্যা। মানুষ প্রতি ১৫-৩০ সেকেন্ড পরপর মুখের লালা গিলে ফেলে। সুতরাং হঠাৎ করেই যদি আপনি লালা আর গিলতে না পারেন এবং তা মুখ বেয়ে পড়তে থাকে, তাহলে বুঝতে হবে আপনি স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন।
স্ট্রোক দ্রুত শনাক্তের জন্য চিকিৎসকেরা সব সময় পরামর্শ দেন–বি ফাস্ট। ইংরেজি ফাস্ট শব্দটি ভেঙে প্রতিটি বর্ণের সাথে এর একটি লক্ষণ যুক্ত করেই চিকিৎসকেরা এই পরামর্শ দেন।
বি—ব্যালেন্স বা ভারসাম্য। হঠাৎ শরীরের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাওয়া।
ই—ই অর্থ আই বা দৃষ্টি। হঠাৎ দেখতে সমস্যা।
এফ—এফ বর্ণের মাধ্যমে ফেস বা মুখমণ্ডল বোঝানো হয়। হঠাৎ মুখের একদিক বাঁকা হয়ে যাওয়া।
এ—এ বর্ণ দিয়ে আর্ম বা বাহুকে বোঝানো হয়। হঠাৎ এক হাত দুর্বল হয়ে যাওয়া। শরীরের দুই হাত এক সাথে উপরে তুলতে গিয়ে কোনো একটি তুলতে না পারলে বুঝতে হবে স্ট্রোকের ঝুঁকি প্রকট।
এস—এস বর্ণ দিয়ে স্পিচ বা হঠাৎ কথা জড়িয়ে আসার কথা বোঝানে হয়।
টি—টি বর্ণ দিয়ে টাইম বা সময়ের কথা বলা হচ্ছে। ওপরে বর্ণিত লক্ষণগুলো দেখা দিলে টি বর্ণ পরামর্শ দিচ্ছে—টাইম টু কল ইমারজেন্সি। এসব লক্ষণ দেখামাত্রই যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসার চেষ্টা করতে হবে।
হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক, জেনে নিন প্রতিকারহঠাৎ হার্ট অ্যাটাক, জেনে নিন প্রতিকার
হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক শষনাক্তের উপায়
রোগ যেমন আলাদা, তেমনি এই এ দুই রোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হতেও চিকিৎসকেরা ভিন্ন পরীক্ষা করে থাকেন। দেখা যাক —
হার্ট অ্যাটাক : সাধারণত ইলেকট্রোকার্ডয়োগ্রাম, ইসিজি ইত্যাদি পরীক্ষার মাধ্যমে হার্ট অ্যাটাকের বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করেন চিকিৎসকেরা। অবশ্য এর আগে রোগীর বর্ণনা, উপসর্গ ইত্যাদি মিলিয়ে নেন তাঁরা।
স্ট্রোক: এ ক্ষেত্রে সাধারণত মস্তিষ্কের সিটি স্ক্যান বা প্রয়োজনে এমআরআই করে বোঝার চেষ্টা করেন চিকিৎসকেরা। তবে এর আগে রোগীর বর্ণনা, উপসর্গ ইত্যাদি মিলিয়ে নেন তাঁরা।
প্রতিরোধের উপায়
লক্ষণ, কারণ ইত্যাদি আলাদা হলেও হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ক্ষেত্রে একই ধরনের প্রতিরোধমূলক সতর্কতা অবলম্বন করতে বলেন চিকিৎসকেরা। মূলত স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনই যেকোনো রোগ থেকে দূরে থাকার একমাত্র উপায়। তারপরও কিছু বিষয়ে সবাইকেই সতর্ক থাকতে হবে—
তামাক গ্রহণ বা ধূমপান ত্যাগ।
হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক হতে পারে এমন করোনারি ধমনী রোগ প্রতিরোধে অ্যালকোহল থেকেও দূরে থাকতে হবে।
শাকসবজি, বাদাম এবং ফল সমন্বিত একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস।
যতটা সম্ভব লাল মাংস, দুগ্ধজাত পণ্য এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়ানো উচিত।
নিয়মিত শরীরচর্চা করা গুরুত্বপূর্ণ।
হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক এড়াতে আপনার রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
রক্তচাপ, বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই), পালস রেট, ইত্যাদি নিয়মিত পরিমাপ করা জরুরি।
যেকোনো লক্ষণ প্রকাশ হলেই চিকিৎসকের শরণ নিতে হবে।
তরুণদের হার্ট অ্যাটাক বাড়ছে, চিকিৎসকদের উদ্বেগতরুণদের হার্ট অ্যাটাক বাড়ছে, চিকিৎসকদের উদ্বেগ
স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাক দুটিই খুব পরিচিত আর জটিল সমস্যা। যেকোনো বয়সেই হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও বিশেষত ৪০ বছর বয়সের পর যে কেউ আক্রান্ত হতে পারেন এসব রোগে। তবে স্থূল, ধূমপায়ী, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, রক্তে চর্বির আধিক্য ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় দুটি রোগেরই। ফলে সাবধান থাকা ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করাই সর্বোত্তম পন্থা।
No comments