Header Ads

এলার্জি রোগ ও কিভাবে চিকিৎসা করবেন || Allergic diseases and how to treat || Dr. Abida Sultana

এলার্জি রোগ ও কিভাবে চিকিৎসা করবেন, ডা. আবিদা সুলতানা,  Allergic diseases and how to treat, Dr Abida Sultana,


এলার্জি লাখ লাখ মানুষের কাছে এক অসহনীয় ব্যাধি, এলার্জি হাঁচি থেকে শুরু করে খাদ্য ও  ঔসুধের ভীষণ প্রতিক্রিয়া কিংবা শ্বাসকষ্ট হতে পারে, কারো ক্ষেত্রে এলার্জি সামান্য তম অসুবিধা করে, আবার কারো ক্ষেত্রে জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। ঘরের ধুলা-বালি পরিষ্কার করছেন? হঠাৎ করে হাঁচি এবং পরে শ্বাসকষ্ট অথবা ফুলের গন্ধ নিচ্ছেন বা গরুর মাংস, চিংড়ি, ইলিশ কিংবা গরুর দুধ খেলে শুরু হলো গা চুলকানি বা চামড়ায় লাল লাল চাকা হয়ে ফুলে ওঠা। এগুলি হলে আপনার এলার্জি আছে ধরে নিতে হবে। এলার্জি কীঃ কেন হয় এবং কী করে এড়ানো যায়, তা নিয়ে কিছু আলোচনা করা যাক।


প্রত্যেক মানুষের শরীরে এক একটি প্রতিরোধ ব্যাবস্থা বা ইমিউন সিষ্টেম থাকে। কোনো কারণে এই ইমিউন সিষ্টেমে গোল-যোগ দেখা দিলে তখন এলার্জির বহিঃ প্রকাশ ঘটে। এলার্জি আমাদের শরীর সব সময় ক্ষতিকর বস্তুকে (পরজীবী, ছত্রাক, ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া) প্রতিরোধের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের চেষ্টা করে। এই প্রচেষ্টাকে রোগ প্রতিরোধ প্রক্রিয়া বা ইমিউন বলে। কিন্তু কখনো আমাদের শরীর সাধারণত ক্ষতিকর নয়, এমন অনেক ধরনের বস্তুুকে ক্ষতিকর ভেবে প্রতিরোধের চেষ্টা করে, সাধারণত ক্ষতিকর নয়, এমন সব বস্তুর প্রতি শরীরের এই অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়াকে এলার্জি বলা হয়। এলার্জি সৃষ্টিকারী বহিরাগত বস্তুু গুলিকে এলার্জি উৎপাদক কিংবা এলার্জেন বলা হয়।


এলার্জি জনিত প্রধান সমস্যা

এলার্জি জনিত সর্দি কিংবা এলার্জিক রাইনাইটিস এর উপসর্গ হচ্ছে অনবরত হাঁচি, নাক চুলকানো, নাক দিয়ে পানি পড়া কিংবা নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, কারো কারো চোখ দিয়েও পানি পড়ে এবং চোখ লাল হয়ে যায়। এলার্জিক রাইনাইটিস দুই ধরনের সিজনাল এলার্জিক রাইনাইটিসঃ বছরের একটি নির্দিষ্ট সময় এলার্জিক রাইনাইটিস হলে একে সিজনাল এলার্জিক রাইনাইটিস বলা হয়। পেরিনিয়াল এলার্জিক রাইনাইটিসঃ সারা বছর ধরে এলার্জিক রাইনাইটিস হলে একে পেরিনিয়াল এলার্জিক রাইনাইটস বলা হয়।


লক্ষণ ও উপসর্গ :

সিজনাল এলার্জিক রাইনাইটিস ঘন ঘন হাঁচি, নাক দিয়ে পানি পড়া, নাসারন্ধ্র বন্ধ হয়ে যাওয়া। এছাড়া অন্য উপসর্গ, চোখ দিয়ে পানি পড়া ও চোখে তীব্র ব্যথা অনুভব করা। পেরিনিয়াল এলার্জিক রাইনাইটিস পেরিনিয়াল এলার্জিক রাইনাইটিসের উপসর্গ গুলি সিজনাল এলার্জিক রাইনাইটিসের মত। কিন্তু এক্ষেত্রে উপসর্গ গুলি তীব্রতা কম হয় এবং স্হায়িত্বকাল বেশি হয়।


অ্যাজমা বা হাঁপানি :

১. এর উপসর্গ হচ্ছে কাশি, ঘন ঘন শ্বাসের সঙ্গে বাঁশির মতো শব্দ হওয়া বা বুকে চাপ চাপ লাগা। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে মাঝে মাঝে ঠান্ডা লাগা।

২. অ্যাজমা রোগের প্রধান উপসর্গ বা লক্ষণ গুলি হলো

বুকের ভিতর বাঁশির মত সাঁই সাঁই আওয়াজ

৩. শ্বাস নিতে ও ছাড়তে কষ্ট

৪. দম খাটো অর্থাৎ ফুসফুস ভরে দম নিতে না পারা

৫. ঘন ঘন কাশি

৬. বুকে আটসাট বা দম বন্ধ ভাব

৭. রাতে ঘুম থেকে উঠে বসে থাকা


একজিমা :

একজিমা বংশগত চর্মরোগ, যার ফলে ত্বক শুস্ক হয়, চুলকায়, আঁশটে এবং লালচে হয়। খোঁচানোর ফলে ত্বক পুরু হয় ও কখনো কখনো উঠে যায়। এর ফলে ত্বক জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত ত্বক থেকে চুয়ে চুয়ে পানি পড়ে এবং দেখতে ব্রণ আক্রান্ত বলে মনে হয়। এটা সচরাচর বাচ্চাদের মুখে ও ঘাড়ে এবং হাত ও পায়ে বেশি দেখা যায়। এলার্জিক কনজাংটাইভাইটিস চোখে চুলকানো, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা রক্ত পরীক্ষা বিশেষতঃ রক্তে ইয়োসিনোফিলের মাত্রা বেশি আছে কিনা তা দেখা। সিরাম আইজিই’র মাত্রাঃ সাধারণত এলার্জি রোগীদের ক্ষেত্রে আইজিই’র মাত্রা বেশি থাকে, স্কিন প্রিক টেষ্টঃ এই পরীক্ষায় রোগীর চামড়ার ওপর বিভিন্ন এলার্জেন দিয়ে পরীক্ষা করা হয় এবং এই পরীক্ষায় কোন কোন জিনিসে রোগীর এলার্জি আছে, তা ধরা পড়ে।


প্যাচ টেষ্ট  : 

এই পরীক্ষায় রোগীর ত্বকের ওপর, বুকের এক্স-রেঃ হাঁপানি রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসা শুরু করার আগে অবশ্যই বুকের এক্স-রে করে দেয়া দরকার যে, অন্য কোনো কারণে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে কিনা, স্পাইরোমেট্রি বা ফুসফুসের ক্ষমতা দেখাঃ এই পরীক্ষা করে রোগীর ফুসফুসের অবস্থা সম্পর্কে সঠিক ধারণা করা যায়, সমন্বিত ভাবে এলার্জির চিকিৎসা হলো এলার্জেন পরিহারঃ যখন এলার্জির সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায়, তখন তা পরিহার করে চললে সহজ উপায়ে এলার্জি নিয়ন্ত্রণ করা যায়।


ওষুধ প্রয়োগ : 

এলার্জিভেদে ওষুধ প্রয়োগ করে এলার্জি উপশম অনেকটা পাওয়া যায়।


এলার্জি ভ্যাকসিন কিংবা ইমুনোথেরাপি : 

এলার্জি দ্রব্যাদি থেকে এড়িয়ে চলা ও ওষুধের পাশাপাশি ভ্যাকসিনও এলার্জিজনিত রোগীদের অসুস্থ থাকার অন্যতম চিকিৎসা পদ্ধতি। এই পদ্ধতি ব্যবহার কর্টিকোষ্টেরয়েডের ব্যবহার অনেক কমে যায়। ফলে কর্টিকোষ্টেরয়েডের বহুল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে রেহাই পাওয়া যায়। বিশ্বের অধিকাংশ দেশে, বিশেষ করে উন্নত দেশ গুলিতে এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে। বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্হা এই ভ্যাকসিন পদ্ধতির চিকিৎসাকে এলার্জি জনিত রোগের অন্যতম চিকিৎসা বলে অভিহিত করে। এটা এলার্জি রোগীদের দীর্ঘ মেয়াদি সুস্থ থাকার একমাত্র চিকিৎসা পদ্ধতি। আগে ধারণা ছিল এলার্জি একবার হলে আর সারে না। কিন্তু বর্তমানে চিকিৎসা ব্যবস্হার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। প্রথম দিকে ধরা পড়লে এলার্জি জনিত রোগ একেবারে সারিয়ে তোলা সম্ভব। অবহেলা করলে এবং রোগ অনেক দিন ধরে চলতে থাকলে নিরাময় করা কঠিন হয়ে পড়ে।


এলার্জি রোগ ও কিভাবে চিকিৎসা করবেন || ডা. আবিদা সুলতানা
Allergic diseases and how to treat || Dr. Abida Sultana


[আপনি যদি মনে করেন পোস্টটি গুরুত্বপূর্ণ তবে শেয়ার করে বন্ধুদের দেখার সুযোগ দিন। নিজে জানুন ও অন্যকে জানতে সাহয্য করুন। নিয়মিত লাইক, কমেন্টস না করলে এই মুল্যবান পোস্ট গুলো আর আপনার ওয়ালে খুজে পাবেন না।]

No comments

Powered by Blogger.