কর্মজীবী মায়েদের জন্য ডায়েট || Diet for working mothers || Dr. Abida Sultana
কর্মজীবী মায়েদের জীবন সম্পূর্নভাবে আলাদা। তারা ঘর ও কর্মস্থল একসাথে সামলায়। কাজের তাড়াহুড়ার মাঝে তারা নিজের যত্ন নেওয়ার সময় পায় না। তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব পড়ে। ডেস্ক জব করার ফলে শরীরে মেদ জমে যায়। তাই কর্মজীবি মায়েদের খাদ্যতালিকা হওয়া উচিত স্বাস্থ্যসম্মত। খাবারে ভারসম্যতা বজায় রাখলে শারীরিক ভাবে নিজেকে ফিট রাখা অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। দৈনিক কাজের শত ব্যস্ততার মধ্যে একটি স্বাস্থ্যকর খাবারের পরিকল্পনা করা উচিত।
মায়েরা পৃথিবীর সবচেয়ে ব্যস্ত প্রজাতি। একজন মা কখনোই নিজেকে নিয়ে ভাবেন না। তিনি সবসময় তার সন্তানের জন্য চিন্তা করেন। এরপর নিজেকে নিয়ে ভাবেন। একজন মা শিক্ষক, ডাক্তার, আইনজীবী, কাউন্সেলর, বিজ্ঞানী এবং আরও অনেক কিছু। তারপরও তার কাছে পরিবার বেশি প্রাধান্য পায়।
কর্মজীবি মায়েরা সময় বাঁচাতে অফিসে প্রক্রিয়াজাত খাবার বহন করে থাকেন। এতে ওজন বেড়ে যায়। এ ছাড়াও, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি থাকে। গর্ভাবস্থা, প্রসব এবং পরবর্তীতে মেনোপজের ফলে হাড়ের ক্ষয় হওয়া শুরু করে। ৩০’এ পৌঁছানোর পর, হাড়ের ক্ষয় ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। তাই প্রত্যের নারীরই নিজের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।
পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা
প্রতিটি বয়স, গোষ্ঠী, লিঙ্গ এবং শারীরিক কার্যকলাপের জন্য পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। একজন মহিলার প্রতিদিন ১৭০০ ক্যালোরির, ২৫ গ্রাম চর্বি ,৮০০ এমজি ক্যালসিয়াম, ১৫ এমজি আয়রন, ৪৫ গ্রাম প্রোটিনের প্রয়োজন হয়। তাই খাদ্যতালিকায় সব ধরনের পুষ্টি রাখার চেষ্টা করুন।
সকালের নাস্তা এড়িয়ে যাবেন না
কেবল কফি দিয়ে আপনার দিন শুরু করবেন না। নাস্তার প্লেটে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার রাখুন। যা আপনাকে মধ্যাহ্নভোজ পর্যন্ত শক্তি দেবে। নাস্তায় প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার রাখুন। সেদ্ধ ডিম, খেজুর, দুধ, দই, ডাল খেতে পারেন।
স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস
স্ন্যাকস হিসেবে ভাজাপোড়া খাওয়া এড়িয়ে চলুন। চিনাবাদাম, ফল, নারিকের, দই খান। এগুলোর জন্য আপনাকে রান্না করতে হবে না। আপনার সময়ও বেঁচে যাবে।
মধ্যাহ্নভোজ
পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যতালিকা বেছে নিন। দুপুরের খাবারে ডিম, মাছ, মটরশুটি, ডাল, শাকসবজি, মাংস খেয়ে নিন। প্রোটিন জাতীয় খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।
হ্যাপি ফুড
অতিরিক্ত কাজ এবং চাপ অনুভব করলে কলা, বেরি, মটরশুটি, ডার্ক চকলেট, নারকেল খান। এসব খাবার রয়েছে ফেনোলিক যৌগ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যামিনো অ্যাসিড। এগুলো বিষণ্ণতা কমাতে সাহায্য করে। তাই এসব খাবার হ্যাপি ফুড নামে পরিচিত। এই খাবারগুলি হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। খারাপ কোলেস্টেরল কমাতেও সাহায্য করে।
খাবারের পরিমাণ
একসাথে অতিরিক্ত খাবেন না। চেষ্টা করুন, খাবার দ্বিতীয় বার না নেওয়ার। একটি খাবার প্লেটে সব কিছু নিয়ে নিন। এবার আস্তে আস্তে খান। দেখবেন খাবারের পরিমাণ বজায় থাকবে।
হলুদের দুধ
হলুদের দুধ ক্যালসিয়ামের প্রয়োজনীয়তা মিটায়। ঘুমের উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়িয়ে দেয়। তাই রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে অবশ্যই এক গ্লাস হলুদের দুধ পান করুন।
বাদাম
বিছানায় যাওয়ার আগে কিছু বাদাম ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন ঘুম থেকে ওঠার পর খেয়ে নিন। এগুলো স্বাস্থ্যকর চর্বি। শরীরের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করবে।
কর্মজীবী মায়েদের জন্য ডায়েট || Diet for working mothers || Dr. Abida Sultana
আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ার করে অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিন।
আরো পড়ুন ধূমপান ছাড়ার কিছু কার্যকর খাবার
No comments