মেদ কমানোর উপায় || Ways to lose fat || Dr. Abida Sultana
মেদ কমানোর জন্য খাবার গুলো হচ্ছে কাজুবাদাম, তরমুজ, মটরশুটি, সবুজ শাক-সবজি,
শশা, আভাকাডো, যব , পানি, আপেল ও পিপারমেন্ট। দীর্ঘক্ষণ পেট ভর রাখার জন্য ত্বক মসৃনকারী
ভিটামিন ই ও আমিষ সমৃদ্ধ কাজুবাদাম এক মুঠোই যথেষ্ঠ।
স্বাস্থ্যকর খাবার খান: পেটের বাড়তি মেদ কমানোর প্রধান ধাপ হল স্বাস্থ্যকর
খাবার খাওয়া। শরীরে পর্যাপ্ত প্রোটিন ও ফাইবার না গেলে ওজন বাড়বে বই কমবে না। তাই
ইচ্ছে করলেই বাইরের ভাজাভুজির বদলে ফল, ওটস, বাদাম, ডিম, সবুজ শাকসব্জি বেশি করে খান।
কম ক্যালরির ডায়েট কিংবা না খেয়ে থাকা আপনার ওজন কমাতে পারে ঠিকই কিন্তু এর
প্বার্শ-প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারেও আপনার জানা প্রয়োজন। কারণ আপনি যখন ওজন কমাচ্ছেন, তার
পুরোটার প্রভাব পরে আপনার শরীরের মাংসপেশীতে।
আপনার মাংসপেশী দুর্বল হয়ে পড়ে এর কারণে। ফলে এটা মেটাবলিজম বা বিপাকক্রিয়াকে
ধীর করে দেয়। এছাড়াও ডায়াবেটিকস টাইপ ২ তে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। অন্যদিকে,
ভুঁড়ি কমানোর জনপ্রিয় মাধ্যম হলো সাপলিমেন্ট সেবন করা। কিন্তু এতে পাশ্বপ্রতিক্রিয়া
আছে।
তাই এমনটি করলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ। অনেকে ওজন সমস্যা জন্যে
ডিটক্স প্রোগ্রাম বা শরীরের বাড়তি চর্বি কমানোর উপায় ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু এখানেও
আছে অপকারীতা।
আপনি যে পন্থাই অবলম্বন করুন না কেন, মনে রাখবেন প্রতিদিন আপনার শরীরের ১২০০
ক্যালরি প্রয়োজন হয়। অর্থ্যাৎ ডায়েট চার্ট অনুসরণ করলেও আপনাকে ১২০০ ক্যাররি নিতে হবে
প্রতিদিন। নাহলে আপনি পুষ্টিহীনতা ও দুবর্লতায় ভুগবেন যা আপনার প্রতিদিনের কাজে ভালো
রকমের একটা প্রভাব ফেলবে।
আপনি যত তাড়াতাড়ি মেদ কমাবেন তত তাড়াতাড়ি তা ফিরে আসার সম্ভাবনা থাকে। আর তখন
আবার আপনার মাংশপেশীর থেকে চর্বি বেড়ে যাবে।
আপনি যদি পেটের মেদ কমাতে চান তাহলে এইসব খাদ্য আপনাকে এড়িয়ে চলতেই হবেঃ
১) যেসব খাবারে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। এসব খাবারকে কার্ব ডেন্স
বলা হয়ে থাকে। আবার এর মানে এই না যে যেসব প্রোডাক্টে কার্ব রয়েছে তার সবগুলোর কার্ব
ডেন্স। কার্ব ডেন্স আমরা শুধু সেগুলোকেই বলতে পারি যেগুলোতে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট
রয়েছে এবং যেসব বেশি পরিমাণে খেতে হয়।
যেমনঃ আপনি যদি একটি মাঝারি সাইজের আলু খান তাহলে তাকে কার্ব ডেন্স নয়, ব্যাড
কার্ব বলতে পারেন। কারণ ৬ আউন্সের এই আলুতে মিনারেলের পরিমাণই থাকে বেশি। আর এই ছয়
আউন্সের মধ্যে মাত্র ২৩% থাকে কার্বোহাইড্রেট। এই পরিমাণ তুলনামূলকভাবে খুব একটা বেশি
নয়। সুতরাং আলু নিঃসন্দেহে খেতে পারেন।
২) আনহেলদি ফ্যাটওয়ালা খাবার গ্রহণ থেকে দূরে থাকুন। আমাদের পেটের মেদ বাড়াতে
বিভিন্ন ধরণের ফ্যাট কাজ করে। এগুলোর মধ্যে স্যাচুরেটেড, ট্র্যান্স, ওমেগা-৬ ইত্যাদি।
গরুর দুধ, সয়াবিন, প্রসেসড মাংস ইত্যাদি খাবারে এমন ফ্যাট প্রচুর পরিমাণে থাকে। তাই
পরের বার যখঙ্খাবার কিনতে যাচ্ছেন তখন এসব খাবার কেনা থেকে বিরত থাকুন।
৩) মেদ বাড়াতে আরেকটি খাবার খুব ভূমিকা রাখে। তা হলো– আর্টিফিশিয়াল বা ন্যাচারাল
মিষ্টি কিংবা চিনি। কেননা এগুলো শরীরের ইনসুলিন নির্গত করে। ফলে শরীরের গ্লুকোজের মাত্রা
বাড়তে থাকে যা আপনাকে মুটিয়ে দেয়। তাই যেকোন ধরণের সফট ড্রিংকস খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
এমনকি তা যদি ডায়েট ড্রিংকস হয় তবুও।
এবার তাহলে চলুন পরিচিত হই, এমন একটি উপাদানের সাথে যা আমাদের মেদকে কমিয়ে দিবে
মাত্র তিনদিনেই।এই উপাদানটি হলো ডিম। জ্বী, ডিম আপনার পেটের মেদকে
কমিয়ে দিতে পারে রাতারাতি।
প্রথম দিন
সকালের নাস্তায় খাবেন –
চিনি ছাড়া এক কাপ গ্রিন টি
২টি টমেটো
২টি সেদ্ধ ডিম
দুপুরের খাবারে খাবেন –
২টি ডিমের সাদা অংশ
চার আউন্স অর্থ্যাৎ ১১৩ গ্রাম সেদ্ধ কিংবা বেকড মাছ
এক কাপ চিনি ছাড়া গ্রিন টি
লাঞ্চ আর দুপুরের খাবারের মাঝে একবার নাস্তা করে নিতে পারেন একটি গ্রিন আপেল
দিয়ে।
রাতের খাবারে খাবেন –
সেদ্ধ করা সবজি যেমনঃ ফুলকপি, শিম, মটরশুটি, গাজর
চিনিছাড়া এক কাপ গ্রিন টি
এবার দ্বিতীয় দিনের ডায়েটে চোখ রাখা যাক
দ্বিতীয় দিন সকালের নাস্তায় খাবেন –
চিনি ছাড়া এক কাপ গ্রিন টি
২টি সেদ্ধ ডিম
১টি কলা
লাঞ্চে খাবেন –
২টি ডিমের সাদা অংশ
৪.২ আউন্স অর্থ্যাৎ ১২৯ গ্রাম চামড়া ছাড়া সেদ্ধ মুরগি
এক কাপ চিনি ছাড়া গ্রীন টি
রাতের খাবারে খাবেন –
একটি রুটি
চার আউন্স অর্থ্যাৎ ১১৩ গ্রাম ঘরে বানানো চিজ
এক কাপ লো ফ্যাট দুধ
সবশেষ দিন অর্থ্যাৎ তিন নাম্বার দিনে আপনি কি রাখবেন খাবারের লিস্টে
সকালের নাস্তায় খাবেন –
এক ক্লাস টমেটো জুস
দুটো সেদ্ধ ডিম
দুপুরের খাবারে খাবেন –
এক কাপ চিনি ছাড়া গ্রিন টি
দুটো ডিমের সাদা অংশ
৪.২ আউন্স অর্থ্যাৎ ১২৯ গ্রাম রান্না করা লাল মাংস
রাতের খাবারে খাবেন –
গ্রিন সালাদ
দুটো বেকড আলু
চিনি ছাড়া এক কাপ গ্রিন টি
বেশি করে গ্রিন টি এই ডায়েট চার্টে রাখার কারণ হলো
গ্রিনটি আপনাকে বেশি স্মার্ট করে তোলে
ফ্যাট কমিয়ে দেয়
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
অ্যালজাইমার ও পার্কিসন রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে
দাঁতের ইনফেকশন দূর করে
কার্ডিওভাসকুলার রোগ প্রতিরোধ করে
ডায়াবেটিকস কমায়
গ্রীনটিতে বায়ো অ্যাকটিভ কম্পাউন্ড রয়েছে যা শরীরকে চাঙ্গা রাখে
মেটাবলিজম প্রসেসকে ত্বরান্বিত করে
তাহলে মেদ কমানোর ডায়েট শুরু করে দিন আজই। পেটের মেদ কমানোর এই কার্যকরী উপায়ে
নিজেকে আরও আকর্ষনীয় করুন এবং আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনুন।
আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ার করে অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিন।
আরো পড়ুন ধূমপান ছাড়ার কিছু কার্যকর খাবার
No comments