উচ্চ রক্তচাপ কী ? || What is high blood pressure? || Dr. Abida Sultana
উচ্চ রক্তচাপ কী ?
হৃৎপিণ্ডের ধমনীতে
রক্ত প্রবাহের চাপ অনেক বেশি থাকলে সেটিকে উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেশার হিসেবে
চিহ্নিত করা হয়।
দু'টি মানের মাধ্যমে
এই রক্তচাপ রেকর্ড করা হয় -
সিস্টোলিক ও ডায়াস্টলিক।
যেটার সংখ্যা বেশি সেটাকে বলা হয় সিস্টোলিক প্রেশার, আর যেটার সংখ্যা কম সেটা ডায়াস্টলিক
প্রেশার।
প্রতিটি হৃৎস্পন্দন
অর্থাৎ হৃদপিণ্ডের সংকোচন ও সম্প্রসারণের সময় একবার সিস্টোলিক প্রেশার এবং একবার ডায়াস্টলিক
প্রেশার হয়।
একজন প্রাপ্তবয়স্ক
সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের রক্তচাপ থাকে ১২০/৮০ মিলিমিটার মার্কারি।
কারও ব্লাড প্রেশার
রিডিং যদি ১৪০/৯০ বা এর চেয়েও বেশি হয়, তখন বুঝতে হবে তার উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা
আছে।
অন্যদিকে রক্তচাপ
যদি ৯০/৬০ বা এর আশেপাশে থাকে, তাহলে তাকে লো ব্লাড প্রেশার হিসেবে ধরা হয়।
উচ্চ রক্তচাপ কেন
হয়?
৯০ ভাগ রোগীর ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের কোনো নির্দিষ্ট কারণ জানা যায় নি। একে প্রাইমারি উচ্চ রক্তচাপ বলে। সাধারণত বয়স্ক মানুষের উচ্চ রক্তচাপ বেশি হয়ে থাকে। কিছু কিছু বিষয় উচ্চ রক্তচাপের আশঙ্কা বাড়ায়। যেমন :
- বংশগত কারণ : উচ্চ রক্তচাপের বংশগত ধারাবাহিকতা রয়েছে। মা-বাবার উচ্চ রক্তচাপ থাকলে সন্তানেরও উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
- তামাকজাত দ্রব্য সেবন ও ধূমপান : ধূমপায়ীদের শরীরে তামাকের নানা রকম বিষাক্ত পদার্থের প্রতিক্রিয়ায় উচ্চ রক্তচাপসহ ধমনী, শিরার নানা রকম রোগ ও হৃদরোগ দেখা দিতে পারে।
- খাবারে অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ : খাবার লবণে সোডিয়াম থাকে। এটি রক্তের জলীয় অংশ বাড়ায়। এতে রক্তের আয়তন বেড়ে যায় এবং রক্তচাপও বেড়ে যায়।
- অধিক ওজন এবং অলস জীবনযাত্রা : যথেষ্ট পরিমাণে ব্যায়াম ও শারীরিক পরিশ্রম না করলে শরীরের ওজন বেড়ে যেতে পারে। এতে হৃদযন্ত্রকে অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হয় এবং এর কারণে অধিক ওজনসম্পন্ন লোকদের উচ্চ রক্তচাপ হয়।
- অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস : অতিরিক্ত চর্বিজাতীয় খাবার, যেমন : মাংস, মাখন এবং ডুবো তেলে ভাজা খাবার খেলে ওজন বাড়বে। ডিমের হলুদ অংশ এবং কলিজা, মগজ এসব খেলে রক্তের কোলেস্টেরল বেড়ে যায়। রক্ত অতিরিক্ত কোলেস্টেরল হলে রক্তনালির দেয়াল মোটা ও শক্ত হয়ে যায়। এতে রক্তচাপ বাড়তে পারে।
- অতিরিক্ত মদ্যপান : যারা নিয়মিত অত্যধিক পরিমাণে মদ্যপান করে, তাদের উচ্চ রক্তচাপ বেশি হয়। অ্যালকোহলে অতিরিক্ত ক্যালরি থাকে। এতে ওজন বাড়ে এবং রক্তচাপ বেড়ে যায়।
- ডায়াবেটিস : ডায়াবেটিস রোগীদের অ্যাথারোস্ক্লেরোসিস বেশি হয়। এতে প্রবীণদের সঙ্গে সঙ্গে ডায়াবেটিস রোগীদের উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেয়। এ ছাড়া তাদের অন্ধত্ব ও কিডনির নানা রকম রোগ হতে পারে।
- অতিরিক্ত মানসিক চাপ : অতিরিক্ত রাগ, উত্তেজনা, ভীতি এবং মানসিক চাপের কারণেও রক্তচাপ সাময়িকভাবে বেড়ে যেতে পারে। এই মানসিক চাপ অব্যাহত থাকলে এবং রোগী ক্রমবর্ধমান মানসিক চাপের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পারলে উচ্চ রক্তচাপ স্থায়ী রূপ নিতে পারে।
কিছু কিছু রোগের
কারণে উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে। নির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া গেলে একে বলা হয় সেকেন্ডারি
হাইপারটেনশন। এই কারণগুলোর মধ্যে কয়েকটি হলো :
কিডনির রোগ।
অ্যাড্রেনাল গ্রন্থি
ও পিটুটারি গ্রন্থির টিউমার।
ধমনীর বংশগত রোগ।
গর্ভধারণ অবস্থায়
অ্যাকলাম্পসিয়া ও প্রি এক্লাম্পসিয়া হলে।
অনেক দিন ধরে জন্মনিয়ন্ত্রণের
বড়ির ব্যবহার। স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ গ্রহণ এবং ব্যথা নিরামক কিছু কিছু ওষুধ খেলে।
No comments