Header Ads

চোখ ওঠা বা কনজাংটিভাইটিস কি || What is conjunctivitis || Dr. Abida Sultana

চোখ ওঠা বা কনজাংটিভাইটিস কি  ||  ডা. আবিদা সুলতানা || What is conjunctivitis || Dr. Abida Sultana


চোখ ওঠা বা কনজাংটিভাইটিস কিঃ 
চোখের পর্দা বা কনজাংটিভায় প্রদাহ হওয়াকে কনজাংটিভাইটিস বলে। সাধারণত চোখের সাদা অংশ লাল হয়ে ফুলে গেলে আমরা একে চোখ ওঠা বলি। এটি একটি সংক্রামক বা ছোঁয়াচে রোগ। শীতকালীন আবহাওয়া ও বসন্তের শুরুর দিকে চোখ ওঠা খুবই পরিচিত রোগ। এটি ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে হতে পারে, অথবা অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়ার কারণেও হতে পারে। এদের মধ্যে ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসজনিত কনজাংটিভাইটিস উভয়ই অত্যন্ত সংক্রামক বা ছোয়াঁচে। তবে অ্যালার্জিজনিত কনজাংটিভাইটিস ছোঁয়াচে নয়।

 

কেন হয়:

* অ্যালার্জিজনিত কনজাংটিভাইটিস কিছু নির্দিষ্ট বস্তুর প্রতি শরীরের প্রতিক্রিয়ার কারণে হয়ে থাকে। যেমন গাছপালা, ঘাস এবং আগাছার পরাগ, ধুলোবালি, কন্টাক্ট লেন্স ও প্রসাধনীর ব্যবহার। তবে এ ধরনের কনজাংটিভাইটিস ছোঁয়াচে নয়।

* ভাইরাসজনিত কনজাংটিভাইটিস ভাইরাস দ্বারা চোখের সংক্রমণের কারণে হয়। যার মধ্যে অনেক ভাইরাস শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ, ঠান্ডা বা গলা ব্যথার সাথে যুক্ত।

* ব্যাকটেরিয়াজনিত কনজাংটিভাইটিস নির্দিষ্ট ব্যাকটেরিয়া দ্বারা চোখের সংক্রমণের কারণে হয় এবং সহজেই ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তিতে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

 

কনজাংটিভাইটিস বা চোখ ওঠা রোগ কিভাবে ছড়ায়?

এ রোগে চোখে অনেক চুলকায়,হাত দিয়ে অনেকে চোখ চুলকায় বা কচলায়, এতে হাতে ইনফেকশন লেগে যায়,এই হাত দিয়ে যখন অন্য কিছু ধরা হয় তখন ইনফেকশন ওই স্থানে লেগে যায়, ওই স্থানে যখন অন্য কেউ ধরে তখন সেই মানুষের হাতে সেই ইনফেকশন লেগে যায়, এভাবে মূলত এই রোগ ছড়ায়।

কেউ যদি একই কনট্যাক্ট লেন্স বারবার ব্যবহার করে তাহলে তার জন্যও এ ধরনের সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। কারণ ব্যাকটেরিয়া লেন্সে বেঁচে থাকতে এবং বৃদ্ধি পেতে পারে।

 

পাশাপাশি চোখের পুরানো বা ব্যাকটেরিয়া,ভাইরাস দূষিত প্রসাধনী ব্যবহারের মাধ্যমেও এটি ছড়াতে পারে।

লক্ষণঃ

* এক বা উভয় চোখে লালভাব

* এক বা উভয় চোখে চুলকানি

* এক বা উভয় চোখে তীক্ষ্ণ অনুভূতি

* এক বা উভয় চোখে আস্তরণ পড়া, যা সকালে চোখ খুলতে বাধা দিতে পারে যাকে আমরা সহজ ভাষায় পিঁচুটি বলি

* চোখ থেকে অনবরত পানি পড়া

* চোখে মাঝারি থেকে তীব্র ব্যথা

* ঝাপসা দৃষ্টি বা আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি

* ব্যাকটেরিয়াজনিত কনজাংটিভাইটিস হলে এটি অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের 24 ঘন্টা পরেও উন্নতি করে না, বা লক্ষণগুলি অব্যাহত থাকে বা আরও খারাপ হয়।

 

প্রতিকারঃ

লক্ষণ বা উপসর্গগুলো যদি হালকা হয় এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার কোনো লক্ষণ না থাকে যেমন শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ, কানে ব্যথা, গলা ব্যথা বা জ্বর তাহলে চিকিৎসকের সাথে দেখা করার আগে এক বা দুই দিন অপেক্ষা করা যেতে পারে। অপরদিকে শিশুদের ক্ষেত্রে এমন সমস্যা দেখা দিলে অবিলম্বে শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

করনীয়ঃ

চোখ ওঠা রোগে ময়লায় মত পিচুটি আসে চোখ থেকে, চোখের দুই পাতা একসাথে লেগে যায়। তখন নরম কাপড়, তুলা বা টিস্যু দিয়ে পিচুটি পরিষ্কার করতে হয়। তবে বেশি ঘষাঘষি করা যাবে না, এতে চোখ লাল হয়ে ফুলে যায়। এটি বেশি সিরিয়াস রোগ নয় তবে ৫/৭ দিনের মধ্যে ঠিক না হলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখাতে হবে। এটা যেহেতু চোখ তাই অবহেলা করা যাবে না বিশেষ করে যারা অন্যান্য রোগে ভুগেন যেমন ডায়াবেটিস বা হাইপ্রেসারের রোগীদের বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এটা ছোটো বড় সবার হতে পারে। যারা আাক্রান্ত হয়ে গেছেন তারা নিজেকে আইসোলেট রাখবেন নাহলে পরিবারের একজনের হলে বাকি সবার মধ্যে ছড়িয়ে যাবে।অন্তত ৫/৭ টা দিন সবার থেকে আলাদা থাকবেন, মানুষের সাথে মিশবেন না, নিজের কাপড় / তোয়ালে আলাদা রাখবেন।

 

সংক্রমন প্রতিরোধে করণীয়ঃ

* হাত না ধুয়ে অন্য কাউকে স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকা।

* চোখ স্পর্শ বা মোছার পরে  হাত ভালো করে ধুয়ে নেওয়া। যদি সাবান ও পানি না পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা।

* চোখের প্রসাধনী বা চোখে ব্যবহৃত অন্যান্য দ্রব্যসামগ্রী ভাগাভাগি না করা (উদাহরণস্বরূপ, তোয়ালে, বা টিস্যু)। এমন কি কাশি বা হাঁচির সময় মুখ ও নাক ঢেকে রাখা।

* ওষুধের প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা।



চোখ ওঠা বা কনজাংটিভাইটিস কি  ||  ডা. আবিদা সুলতানা || What is conjunctivitis || Dr. Abida Sultana

আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ার করে অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিন।


ডাঃ আবিদা সুলতানার স্বাস্থ্য পরামর্শ বিষয়ক বই আসুন সুস্থ থাকি 

No comments

Powered by Blogger.