হার্ট অ্যাটাক || Health Awareness in Ramadan || Dr. Abida Sultana
হার্ট অ্যাটাক, যাকে মায়োকার্ডিয়ালইনফার্কশনও বলা হয়, যখন হার্টের পেশীর একটি অংশ পর্যাপ্ত রক্ত পায় না তখন ঘটে।
হার্ট অ্যাটাক হলে চিকিৎসা নিতে
যত দেরি হবে, হৃদপিণ্ডের পেশীর ক্ষতি তত বেশি হয়। করোনারি আর্টারি ডিজিজ (CAD) হার্ট
অ্যাটাকের প্রধান কারণ। একটি সাধারণ কারণ হল করোনারি ধমনীর গুরুতর খিঁচুনি বা আকস্মিক
সংকোচন, যা হৃৎপিণ্ডের পেশীতে রক্ত প্রবাহ বন্ধ করতে পারে।
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ
●
বুকে ব্যথা বা অস্বস্তি। বেশিরভাগ
হার্ট অ্যাটাকের মধ্যে বুকের মাঝখানে বা বাম দিকে অস্বস্তি হয় যা কয়েক মিনিটের বেশি
স্থায়ী হয় বা চলে যায় এবং ফিরে আসে। অস্বস্তি, অস্বস্তিকর চাপ, চাপ, পূর্ণতা বা
ব্যথার মতো অনুভব করতে পারে।
●
দুর্বল,মাথা ঘোরা বা অজ্ঞান বোধ
করা।
●
চোয়াল, ঘাড় বা পিঠে ব্যথা বা
অস্বস্তি।
●
এক বা উভয় বাহু বা কাঁধে ব্যথা
বা অস্বস্তি বোধ হতে পারে।
●
নিঃশ্বাসের দুর্বলতা হতে পারে।
এতে প্রায়শই বুকে অস্বস্তি লাগে তবে বুকের অস্বস্তির আগে শ্বাসকষ্টও হতে পারে।
● হার্ট অ্যাটাকের অন্যান্য লক্ষণগুলির মধ্যে অস্বাভাবিক ক্লান্তি এবং বমি বমি ভাব বা বমি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। মহিলাদের এই অন্যান্য উপসর্গ থাকার সম্ভাবনা বেশি।
হার্টঅ্যাটাক কেন হয়
শরীরে কলস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে গেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি
বেড়ে যায়। শরীরে দুই ধরনের কলস্টেরল থাকে। ভালো এবং খারাপ কলস্টেরল। আপনার শরীরে খারাপ
কলস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে গেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে। জীবনযাত্রার অবনতি এবং খারাপ
খাদ্যাভ্যাসের কারণে শরীরে উচ্চ কলস্টেরল তৈরি হয়।
হার্ট অ্যাটাকের আরো কিছু কারণ হলো-
১. অতিরিক্ত পরিশ্রম করা, যে পরিশ্রমে শরীর অভ্যস্ত নয়।
২. অতিরিক্ত খাওয়ার পরপর শারীরিক পরিশ্রম করা।
৩. একসঙ্গে অতিরিক্ত ধূমপান করা।
৪. নিদ্রাহীনতা।
৫. অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করা।
৬. হঠাৎ উত্তেজিত হওয়া বা রেগে যাওয়া।
৭. শরীরে যে কোনো ধরনের ইনফেকশন।
হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কাদের বেশি?
কিছু বিষয় আছে যেগুলো নিয়ন্ত্রণ করা যায় আবার কিছু কিছু বিষয় আছে যেগুলো নিয়ন্ত্রণ করা যায় না।
(১) হার্ট অ্যাটাক সব বয়সে একরকমভাবে হয় না। সাধারণত মধ্যবয়সে কিংবা বৃদ্ধ বয়সে এ রোগটি বেশি হতে পারে। কিন্তু তার মানে এই না যে ছোট বাচ্চাদের এই সমস্যা হয় না। তাদের ঝুঁকি তুলনামূলক কম থাকে।
(২) ধুমপান ও মদ্যপান ইত্যাদি কারনে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।
(৩) বংশে কারও হার্ট অ্যাটাক হয়ে থাকলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।
(৪) সাধারণত মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের অনেক বেশি হয়।
(৫) ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হাইপার লিপিডেমিয়া ইত্যাদি রোগের কারণে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
(৬) শারীরিক পরিশ্রমের অভাবে মুটিয়ে যাওয়া বা স্থূলতা হার্ট অ্যাটাকের একটি কারণ।
(৭) অধিক হারে চর্বি জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করলে এবং শাকসবজি ও আঁশ জাতীয় খাবার কম খেলে।
(৮) অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা অশান্তির ফলে।
(৯) জন্মনিয়ন্ত্রক পিল বা অন্য কোন হরমোন নিয়ন্ত্রণকারী
ওষুধ সেবনের ফলে।
করণীয়ঃ
হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হলে ভয় পাবেন না। দ্রুত জোরে ও ঘন
ঘন কাশি দেবেন, যেন কাশির সঙ্গে কফ বের হয়ে আসে। প্রতিবার কাশি দেওয়ার আগে দীর্ঘশ্বাস
নিন। এভাবে ঘন ঘন কাশি ও দীর্ঘশ্বাস—প্রতি দুই মিনিট পরপর করতে থাকুন। এতে করে আপনার
হৃৎপিণ্ড কিছুটা হলেও নিয়মিতভাবে রক্ত সঞ্চালন করবে। হাসপাতালে নেওয়ার আগে এটি রোগীকে
সাপোর্ট দেবে অনেকখানি। কারণ, দীর্ঘশ্বাসের ফলে আমাদের শরীরে অক্সিজেন পরিবহন বেশি
হয় এবং ঘন ঘন কাশি দেওয়ার ফলে বুকে যে চাপের সৃষ্টি হয়, তাতে হার্ট পর্যাপ্ত ও নিয়মিতভাবে
রক্ত সঞ্চালনের জন্য প্রস্তুত হয়।
কারো হার্ট অ্যাটাক হলে দ্রুত কিছু ব্যবস্থা নিলে রোগের
ভয়াবহতা কমিয়ে আনা সম্ভব-
১) প্রথমেই ব্যাথানাশক (সাধারণত অ্যাসপিরিন জাতীয়) ওষুধ
খাওয়াতে হবে।
২) যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হাসপাতালে নিতে হবে।
৩) রোগীর শ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছে কিনা খেয়াল করতে হবে।
৪) হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে গেলে সিপিআর পদ্ধতি প্রয়োগ করতে
হব।
হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধের উপায়ঃ
১) স্বাস্থকর ডায়েট অনুসরণ করুন।
১) প্রচুর পরিমানে ফল এবং সব্জি খেতে হবে।
২) রক্তচাপ ঠিক রাখতে নিয়মিত শরীরচর্চা করা প্রয়োজন। এর ফলে একদিকে যেমন রক্তচাপ সঠিক থাকে, তেমনই ওজনও সঠিক থাকে।
৩) ধূমপান ও তামাক জাতীয়
দ্রব্য বর্জন করতেই হবে।
৪) অতিরিক্ত স্ট্রেস বর্জন করতে হবে।
হার্ট অ্যাটাক || ডাঃ আবিদা সুলতানা || Health Awareness in Ramadan || Dr. Abida Sultana
আর্টিকেলটি ভালো লাগলে
শেয়ার করে অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিন।
ডাঃ আবিদা সুলতানার স্বাস্থ্য পরামর্শ বিষয়ক বই আসুন সুস্থ থাকি
No comments