Header Ads

চুল পড়া || Hair loss || Dr. Abida Sultana

 

চুল পড়া || ডা. আবিদা সুলতানা ||  Hair loss || Dr. Abida Sultana

চুল পড়া কি?

 

চুল কেরাটিন নামের এক প্রকার প্রোটিন দিয়ে তৈরি হয়। চুলে ৯৭ ভাগ প্রোটিন ও ৩ ভাগ পানি রয়েছে। চুলের যেটুকু আমরা দেখি সেটি মৃত কোষ। কারণ, এতে অনুভূতিশীল কোনো কোষ নেই। চুল প্রতি মাসে আধা ইঞ্চি করে বড় হয়। স্বাভাবিকভাবে একটি চুল দুই থেকে চার বছর পর্যন্ত বড় হতে থাকে। এরপর বৃদ্ধি কমে যায়। গ্রীষ্মকালে চুল দ্রুত বড় হয় কিন্তু শীতকালে কম বড় হয়। একটি চুলের গড় আয়ু দুই-আট বছর। সুতরাং চুল কিছু না কিছু প্রতিদিন স্বাভাবিকভাবেই ঝরে যায়।

 

 

চুল কেন পড়ে?

অস্বাভাবিক হারে চুল হারানোর কারণ মূলত দুটি। একটি বংশগত ও অন্যটি বয়সজনিত। বংশগত বা জেনেটিক কারণে চুল পড়ার ক্ষেত্রে হরমোন দায়ী। এ ছাড়া বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চুলের ফলিকলগুলো সংকুচিত হয়ে যায় বা চুলের বৃদ্ধিচক্র সংক্ষিপ্ত হয়ে যায়। ফলে চুল গজানোর হারের চেয়ে পড়ার হার বেড়ে যায়। সাধারণত খুশকি, অ্যান্ড্রোজেনিক হরমোন, দুশ্চিন্তা ও চুলে বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করার জন্য চুল পড়ে।

 

 

প্রতিরোধের উপায়

* চুল খুশকিমুক্ত ও পরিষ্কার রাখতে হবে। 

* দুশ্চিন্তামুক্ত জীবন যাপন করতে হবে।

* বয়সের সঙ্গে চুলের রং পরিবর্তন হয়, এটা মেনে নিতে হবে। কলপ, কৃত্রিম রং যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে।

* কোঁকড়া চুল সোজা করার চেষ্টা না করাই ভালো।

* টেনে চুল বাঁধা ঠিক নয়। আস্তে চুল আঁচড়াবেন এবং ভেজা চুল বেশি আঁচড়াবেন না। নরম থাকতে চুল ঠিক করুন। ব্রাশের চেয়ে দাঁতওয়ালা চিরুনি ব্যবহার করা ভালো।

* চুলের ধরন বুঝে শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে।

* যেকোনো ওষুধ গ্রহণের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

 

 

চুলপড়া প্রতিরোধে যে খাবারগুলো সবচেয়ে কার্যকরী:

 

* বিভিন্ন প্রকার বাদাম যেমন কাজু বাদাম, চিনা বাদাম, কাঠবাদাম, পেস্তা বাদাম এগুলোতে আছে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট। বিশেষ করে ওমেগা ফ্যাট। যা চুলের গোড়া শক্ত করতে এবং চুল লম্বা করতে সাহায্য করে। এই ফ্যাট শরীর নিজে থেকে তৈরি করতে পারে না। খাবার থেকে নিতে হয়। এটার অভাবে মাথার চুল পড়ে যায, চুলের রং হালকা হয়ে যায়। তাই প্রতিদিনের নাস্তায় কিছু বাদাম রাখতে পারেন।

* হলুদ, কমলা রঙের সবজি এবং ফলমূল যেমন মিষ্টি আলু, গাজর, আম, পেঁপে, মিষ্টি কুমড়া, এগুলো ভিটামিন এ তে ভরপুর। চুলের গোড়া, যেখান থেকে চুলটা বড় হয় সেটা ঠিক মতো কাজ করার জন্য দরকার ভিটামিন এ। আর সেটার খুব ভালো উৎস হলো এই হলুদ আর কমলা রঙের সবজি আর ফলমূল। যেমন চুলের জন্য দিনে যতটুকু ভিটামিন দরকার তার অর্ধেকই পূরণ হয় মাত্র আধা কাপ গাজরে।

* নিয়মিত ডিম খেতে হবে। ডিম হলো আপনার চুলের ভালো বন্ধু। আমাদের চুল পুরোটাই প্রোটিনের তৈরী। প্রোটিনের অভাবে চুল পড়ে যায়। তাই নিয়মিত ডিম খেলে আপনার চুল পড়া কমে যাবে।

* ঘন কালো চুলের জন্য পালং শাক বেশ উপকারী। এতে আছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, আয়রন যা আপনার চুল ঘন কালো করতে সাহায্য করবে।

* আপনার নিয়মিত খাদ্য তালিকায় ডাল রাখতে পারেন। ডালে প্রচুর প্রোটিন ও আয়রন আছে। আয়রন আমাদের মাথার তালুতে রক্ত সরবরাহ করে চুলের গোড়ায় অক্সিজেন পৌঁছাতে সাহায্য করে।

* ছোলা খাওয়ার অভ্যাস করুন। ছোলাতে আছে আয়রন, জিংক ও প্রোটিন। এই তিনটার যেকোনোটার অভাবে চুল পড়তে পারে। তাই সুন্দর চুলের জন্য আপনার খাদ্য তালিকাতে ছোলা রাখতে পারেন।

* বিভিন্ন টক ফল যেমন কমলা, মাল্টা, লেবু, আমড়া সহ সব ধরনের টক ফল এবং টক দই আপনার চুলপড়া রোধে সাহায্য করবে।

 

 

চিকিৎসা

বেশির ভাগ চিকিৎসায় কিছুটা উন্নতি হলেও একেবারে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। ২-৫ শতাংশ মিনোক্সিডিল ব্যবহার করে বেশ উপকার পাওয়া যায়। বয়সের কারণে চুল পড়ে যাওয়া বা টাক পড়ার জন্য সবচেয়ে বেশি যে ওষুধ ব্যবহার করা হয় তার নাম মিনোক্সিডিল। এটি ক্রিম, ফোম বা স্প্রে আকারে পাওয়া যায়। সঠিক নিয়মে ব্যবহার করলে চুল পড়ার হার কমায়, নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে। নারী-পুরুষ সবাই ব্যবহার করতে পারেন।  চুল পড়া রোধে সর্বোত্তম চিকিৎসা হচ্ছে, মিনোক্সিডিল টপিক্যাল সলিউশনের সঙ্গে পিআরপি (প্লাটিলেট-রিচ প্লাজমা) থেরাপি নেওয়া। ইদানীং চুল প্রতিস্থাপন করা হয়, কিন্তু এটি ব্যয়বহুল। তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ীই সবকিছু করতে হবে।

 

চুল পড়া || ডা. আবিদা সুলতানা ||  Hair loss || Dr. Abida Sultana

আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ার করে অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিন।

ডাঃ আবিদা সুলতানা স্বাস্থ্য পরামর্শ বিষয়ক বই আসুন সুস্থ থাকি 

 

No comments

Powered by Blogger.