Header Ads

লাং এ্যাবসেস বা ফুসফুসের ফোড়া || Lung abscess or lung abscess || Dr. Abida Sultana

 

লাং এ্যাবসেস বা ফুসফুসের ফোড়া || ডাঃ আবিদা সুলতানা, Lung abscess or lung abscess || Dr. Abida Sultana


লাং এ্যাবসেস বা ফুসফুসের ফোড়া

মানুষের শরীরে বিভিন্ন স্থানে যেমন ফোড়া হতে পারে তেমনি মানুষের ফুসফুসেও ফোড়া হতে পারে। ফুসফুসের ভিতরে হওয়া এই ফোড়াকে ইংরেজিতে বলে লাং এ্যাবসেস। পচন ঘটাতে সক্ষম এমন এক ধরনের জীবাণু যদি ফুসফুসে প্রবেশ করে তবে ওই জীবন সংক্রমণে ফুসফুসের যে কোনো স্থানের টিস্যুতে পচন দেখা দিতে পারে। এছাড়া ফুসফুসের ক্রনিক সংক্রমণে ফুসফুসের ভিতরে গর্ত বা ক্ষতের সৃষ্টি হতে পারে এবং সেখানে পুঁজ দেখা দিতে পারে। এইসব লাং এ্যাবসেস এর লক্ষণ। ফুসফুসে একবার একাধিক স্থানে লাং এ্যাবসেস হতে পারে। একাধিক স্থানে হওয়া এ্যাবসেস দুই সেন্টিমিটার ব্যাসার্ধের কম হলে তাকে পচনশীল বা পুঁজযুক্ত নিউমোনিয়া বলা হয়। প্রধানত এনারোবিক (অক্সিজেন ছাড়া বাঁচতে সক্ষম জীবাণু) এবং এরোবিক (বায়ু বা অক্সিজেন নির্ভর জীবাণু) এই দুই ধরনের সংক্রমনের লাং এ্যাবসেস হয় তবে যক্ষ্মাত কারণে লাং এ্যাবসেস হতে পারে। এছাড়া ফাঙ্গাস প্রটোজোয়ার (এককোষী প্রাণী) সংক্রমণেও লাং এ্যাবসেস হতে পারে।

নানা কারণে ফুসফুসে পচনজনিত সংক্রমণ ঘটতে পারে। এর মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ এবং সাধারণ কারণ হলো মুখ গহ্বরের দূষিত বস্তুর (লালা) ফুসফুসে প্রবেশদ, দাঁত অথবা দাঁতের উপরিভাগে পচন, সাইনাসের সংক্রমণ, অজ্ঞান হওয়ার মতো অবস্থায় উপনীত হওয়া, মদ বা সিডেটিভ জাতীয় ঔষধে আসক্তি, এনেসথেযসিয়া, মৃগীরোগ, মস্তিষ্কে আকারজনিত স্ট্রোক, ডায়াবেটিস আক্রান্ত হয়েও কোমায় চলে যাওয়া, গিলতে অসুবিধা, বাগযন্ত্র রুদ্ধ হওয়া, পেশি অকার্যকর হওয়া, ঘাড়ের সার্জারি, মূত্রনালীর সংক্রমণ, পাকস্থলির দূষণ, শিরার মধ্যে মাদক গ্রহণ, ফুসফুসের নানা ধরনের অসুখ জন্মগত অস্বাভাবিকতার কারণে অনেক সময় মুখগহ্বরের দূষিত পদার্থ খাদ্যনালীর পরিবর্তে শ্বাসনালীতে প্রবেশ করে ফুসফুসে পচন ঘটাতে পারে। মুখগহ্বরের এই লালার মধ্যে ব্যাপক সংখ্যক এনারোবিক এরোবিক জীবাণু থাকে। তবে এ্যাবসেস হওয়ার বিষয়টি নির্ভর করে ফুসফুসে প্রবেশ করে লালার পরিমাণ, জীবণুত সংখ্যা রোগীর শারীরিক অবস্থার উপর। এছাড়া কোনো কারণে যদি ফুসফুসের কোনো স্থানে রক্ত বায়ু চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং সেখানে জীবাণুর সংক্রমণ ঘটে তবে সেখানেও পচন দেখা দিতে পারে। কোন কোন জীবাণু সংক্রমনের লাং এ্যাবসেস হয়েছে কাশি পরীক্ষার মাধ্যমে তা নির্ণয় করা যায়। তবে এন্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়ার পর কাশি পরীক্ষা করলে ওই সব জীবাণু সনাক্ত নাও হতে পারে।

 

লক্ষণ :

লাং এ্যাবসেসের ধরা বাঁধা কোনো লক্ষণ নেই। চিকিৎসার কারণে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে রোগীর আঙ্গুল ফুলে যেতে পারে। রোগীর ফুসফুসের উপরিভাগে টোকা দিলেও সাড়া না দেয়া এবং এ্যাবসেস যদি বড় আকারের হয় এবং এ্যাবসেসের অবস্থান যদি ফুসফুসের উপরে দিকে হয় তবে ফুসফুসের ভিতরে শব্দ অস্পষ্ট শোনা যায়। ফুসফুসের এ্যাবসেস সংলগ্ন এলাকা জমে (কনসোলিডেশন) যেতে পারে এবং সে ক্ষেত্রে ফুসফুসের আবরণে ঘর্ষণে এক ধরনের খসখসে আওয়াজ হতে পারে যা স্টেথিসকোপের সাহায্যে শোনা যায়। এ্যাবসেস সংলগ্ন এলাকা যেমন জমে যেতে পারে তেমনি বুকে পানি জমতে পারে।

   
                  ডাঃ আবিদা সুলতানার স্বাস্থ্য পরামর্শ বিষয়ক বই আসুন সুস্থ থাকি https://www.rokomari.com/book/280680/asun-sustho-thaki  https://www.youtube.com/@dr.abidasultana

ডাঃ আবিদা সুলতানার স্বাস্থ্য পরামর্শ বিষয়ক বই আসুন সুস্থ থাকি


পরীক্ষা-নিরীক্ষা:

লাং এ্যাবসেস শনাক্ত করতে সিবিসি করা যেতে পারে। ব্লাড কাউন্টের সংক্রমণে রক্তের যেসব পরিবর্তন ধরা পড়ে, লাং এ্যাবসেস এর ক্ষেত্রেও সেরকম হতে পারে। এছাড়া সাধারণ কাশি পরীক্ষা এবং কাশির কালচার করা যেতে পারে। বুকের এক্সরের সাহায্যে ফুসফুসে এ্যাবসেস হয়েছে কি না তা সনাক্ত করা যায়।

 

চিকিৎসা :

গোড়ার দিকে প্রায় দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে পেনিসিলিন দিয়েই ফুসফুসের এ্যাবসেস চিকিৎসা দেয়া হতো। এরপর অনেক কার্যকরী অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কৃত হওয়ার ফ্ললে বর্তমানে এন্টিবায়োটিক দিয়েই ফুসফুসের এ্যাবসেসের চিকিৎসা দেয়া হয়। অনেক রোগীর ক্ষেত্রে এ্যামোক্সিসিলিন ৫০০ এমজি ঘন্টা পর পর প্রয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। এনারোবিক জীবাণুর সংক্রমণে লাং এ্যাবসেস হলে এর সাথে মেট্রোনিডাজল ৪০০ এমজি ঘন্টা পর পর দেয়া যেতে পারে। রোগীর অবস্থা এবং জীবাণু সংক্রান্ত পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী এন্টিবায়োটিকের রং বদল করা যেতে পারে। কোনো কোনো রোগীকে থেকে সপ্তাহ পর্যন্ত ক্লিন্ডামাইসিন এবং থার্ড জেনারেশন সেফালোসপেরিন দিয়ে চিকিৎসা করা হয়।

ফুসফুসে নিম্নাংশে পচন অথবা এ্যাবসেসের কারণে গর্তের সৃষ্টি হলে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসায় ভালো ফল পাওয়া যায়। ঔষধ দিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার পর কোন সুফল না পাওয়া না গেলে সার্জারির কথা চিন্তা করা যেতে পারে।।

 


লাং এ্যাবসেস বা ফুসফুসের ফোড়া || ডাঃ আবিদা সুলতানা 
Lung abscess or lung abscess || Dr. Abida Sultana

আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ার করে অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিন।

সংগ্রহ করুন ডাঃ আবিদা সুলতানা স্বাস্থ্য পরামর্শ বিষয়ক বই আসুন সুস্থ থাকি

No comments

Powered by Blogger.