ডটস কি || What are the dots || Dr. Abida Sultana
ডটস কি?
ডটস অর্থ ডাইরেক্টলি অবজারভড ট্রিটমেন্ট শর্ট কোর্স অর্থাৎ সরকারি তত্ত্বাবধানে রোগীকে সংক্ষিপ্ত মেয়াদের চিকিৎসা প্রদান। যক্ষ্মা চিকিৎসায় এটি একটি কার্যকর পদ্ধতি যার মাধ্যমে রোগীকে স্বাস্থ্যকর্মী / চিকিৎসা সহায়তাকারীর সরাসরি তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা সম্পন্ন করতে হয়। যক্ষ্মা নিরাময়ে এই পদ্ধতি শতভাগ কার্যকর। যার ফলে মাল্টি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস পায় এবং এই পদ্ধতি সনাক্তকৃত যক্ষ্মারোগীদের নিরাময় লাভে নিশ্চয়তা বিধান করে। এই পদ্ধতির চিকিৎসায় যক্ষ্মা পুনঃআক্রমণ (রিলাপস) এবং রোগী মৃত্যুর হার হ্রাস পায়।
ডটস পদ্ধতির অপরিহার্য উপাদান সমূহ:
- যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে সরকারি অঙ্গীকার।
- ফুসফুসে যক্ষ্মার লক্ষণাদি সহ চিকিৎসাকেন্দ্রে সন্দেহভাজন রোগীদের কফ পরীক্ষার মাধ্যমে যক্ষ্মা রোগ নির্ণয় ও নিরাময়।
- সরাসরি তত্ত্বাবধানে যক্ষ্মা রোগীদের বিনামূল্যের মানসম্পন্ন যক্ষ্মার ঔষধ প্রদানের নিশ্চয়তা।
যক্ষ্মা নিরময়ে ডটস পদ্ধতির কার্যকারিতা:
দরিদ্র দেশ সহ বিশ্বে যে সব স্থানে ডটস পদ্ধতির চিকিৎসা চালু হয়েছে সেখানে রোগ নিরাময়ের জন্য শতকরা ৯৫ ভাগ পর্যন্ত উন্নীত হয়েছে। তাছাড়া এটা প্রমাণিত হয়েছে যে ডটস পদ্ধতির চিকিৎসা যক্ষ্মায় সংক্রামন ও মাল্টি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স হ্রাস করে। বিশ্বব্যাংক এই পদ্ধতি ব্যবস্থাকে সব থেকে কার্যকর ব্যবস্থা বলে স্বীকৃতি দিয়েছে।
ডাঃ আবিদা সুলতানার স্বাস্থ্য পরামর্শ বিষয়ক বই আসুন সুস্থ থাকি
সার্ক দেশ সমূহে ডটস এর সাফল্যের তথ্য:
১৯৯৩ সালে বাংলাদেশে পরীক্ষামূলকভাবে মাত্র চারটি উপজেলায় ডটস পদ্ধতি চিকিৎসা শুরু হয়। বর্তমানে বাংলাদেশের শতভাগ মানুষ ডটস পদ্ধতি চিকিৎসার আওতাভুক্ত। ২০০১ সালে বাংলাদেশের ডটস পদ্ধতি চিকিৎসার আওতাভুক্ত যক্ষ্মারোগীদের শতকরা ৮০ ভাগের বেশী রোগমুক্ত হয়েছে। ১৯৯৭ সালের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বাংলাদেশের যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিকে বিশ্বের মডেল হিসেবে ঘোষণা করে।
ভুটান তার সমগ্র জনসংখ্যা কে ডটস পদ্ধতি চিকিৎসা আওতায় নিয়ে এসেছে এবং দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় এই পদ্ধতির চিকিৎসা সম্প্রসারণের কাজ হাতে নিয়েছে।
মালদ্বীপ ১৯৯৫ সালের মধ্যেই ডটস পদ্ধতি চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু করে। ২০০২ সালের ডটস এর আন্তর্জাতিক লক্ষমাত্রা অর্জন করেছে। ডটস পদ্ধতির চিকিৎসা চালু হওয়ার পূর্বে যেখানে নেপালে আক্রান্ত রোগীদের শতকরা ৫০ ভাগেরও কম রোগমুক্ত হতো। সেখানে ডটস পদ্ধতি চিকিৎসা চালু হওয়ার পর যক্ষ্মা রোগীদের নিরাময় হার বেড়ে শতকরা ৮৯ ভাগের বেশি হয়েছে।
ডটস পদ্ধতির চিকিৎসার উপকারিতা:
ডটস।পদ্ধতির চিকিৎসা চালু হওয়ার ফলে রোগীদের চিকিৎসা সম্পন্ন করার হার বৃদ্ধি পাওয়ায় রোগ নিরাময়ের হার দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া ডটস ব্যবস্থাপনায় রোগীর মৃত্যু ও পুমঃআক্রমণ (রিলাপস) হার বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে ডটস পদ্ধতি চিকিৎসা যক্ষ্মা সংক্রমণ হার ও ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম।
মোট কথা ডটস পদ্ধতির চিকিৎসায়-
- রোগের আয়ু বৃদ্ধি ও জীবনমান উন্নত করে।
- যক্ষ্মার সংক্রমণ রোধ এবং
- মাল্টি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স টিবি বিস্তারের পথ রুদ্ধ করে রোগীর সংখ্যা হ্রাস করে।
ডটস কি || ডাঃ আবিদা সুলতানা
What are the dots || Dr. Abida Sultana
আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ার করে অন্যকে পড়ার
সুযোগ করে দিন।
আরো পড়ুন ধূমপান ছাড়ার কিছু কার্যকর খাবার
No comments